Facebook Tips

হ্যাকার থেকে বাঁচুন! ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায় কি?

ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। বর্তমান সময়ে ফেসবুকের ব্যবহারকারী অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। দিন দিন এর ব্যবহার বাড়ছেই। শুধু ফেসবুক ব্যবহার করলে হবে না এর সাথে ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। ফেসবুক আমাদের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই কারণটা হচ্ছে ফেসবুকের মাধ্যমে আমরা খুব সহজে বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজন সবার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারি। একজন ব্যক্তির কাছে তার ফেসবুক আইডি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এর কারণ হচ্ছে ফেসবুকে আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের অনেক কিছু জড়িয়ে থাকে এবং ব্যক্তিগত তথ্য থাকে যা নষ্ট হয়ে গেলে আমরা বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারি।

ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায়

ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায় আসলে কি? এটা আহামরি কিছু নয় আমরা কিছু সেটিংস পরিবর্তন এবং কিছু নিয়ম অনুসরণ করলে আমাদের ফেসবুক একাউন্ট নিরাপদ রাখতে পারব। এবং তার সাথে আমাদের নিজেদের সচেতন থাকতে হবে। তাহলে আমরা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে পারব। আমি চেষ্টা করব আপনাদের মাঝে ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায় গুলো সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার।

১। পাসওয়ার্ড

যখনই আমাদের মাথায় পাসওয়ার্ডের চিন্তা আসে তখনই আমরা একটি সহজ পাসওয়ার্ড দিয়ে ফেলি কারন হচ্ছে পাসওয়ার্ড সহজ হলে আমাদের মনে রাখতে সুবিধা হয়। আমাদের যেমন সহজ পাসওয়ার্ড মনে রাখতে সহজ হয় তেমনি আমাদের ফেসবুক একাউন্ট হ্যাকারদের কাছে হ্যাক করতে সহজ হয়। তাই পাসওয়ার্ড এর ক্ষেত্রে আমাদের এমন পাসওয়ার্ড নির্বাচন করতে হবে যেটি হ্যাকাররা সহজে বের করতে না পারে। আমাদের মাঝে বেশিরভাগ মানুষ তাদের নাম দিয়ে বা মোবাইল নাম্বার দিয়ে পাসওয়ার্ড দেয়। যেমনঃshakib@,12345678, এভাবে পাসওয়ার্ড দিলে হ্যাকাররা খুব সহজে আপনার পাসওয়ার্ডটি বের করে ফেলবে। আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই কঠিন পাসওয়ার্ড নির্বাচন করতে হবে। কঠিন পাসওয়ার্ডগুলো যে রকম হবে। যেমনঃshAkib##@@98 এভাবে পাসওয়ার্ড দেওয়ার চেষ্টা করুন।

২। নাম,জন্মতারিখ

ফেসবুকে যখন আমরা নাম দেই তখন নাম দেওয়ার সময় আমরা ততটা গুরুত্ব দেইনা কিন্তু এই কাজটি ভুল। ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখার জন্য আমাদের নাম অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। আমাদের মাঝে কিছু মানুষ আছে যারা বিভিন্ন ধরনের অদ্ভুত নাম দিয়ে ফেসবুক একাউন্ট খুলে। যেমনঃ স্বপ্নের বালক, অবুঝ বালিকা, রাজকুমারী আরো নানা ধরনের অদ্ভুত নাম দিয়ে ফেসবুক একাউন্ট খুলে এই কাজটি কখনো করা যাবে না। এর কারণ হচ্ছে যখন আমাদের একাউন্টটি ফেসবুকের কর্তৃপক্ষ বন্ধ বা ডিজেবল করে দিবে। তখন আমরা এই নামগুলো দিয়ে কখনই আমাদের ফেসবুক একাউন্ট ভেরিফাই করতে পারব না। কারণ হচ্ছে এই নামগুলো কোন মানুষের হতে পারে না।

আমরা নামের পাশাপাশি আমাদের জন্ম তারিখ ভুল দিয়ে ফেলি। ফেসবুক একাউন্ট খোলার সময় আমার নাম ও জন্ম তারিখ ততটা গুরুত্ব দেইনা। কিন্তু এগুলো ভুল ইনফরমেশন দেওয়া ঠিক না। তাই আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে যদি নাম বা জন্ম তারিখ ভুল দিয়ে থাকেন তাহলে এটি এখনই ঠিক করে ফেলুন। অবশ্যই ভোটার আইডি কার্ডের সাথে মিল রেখে নাম ও জন্ম তারিখ দিবেন। আর যারা নতুনভাবে একাউন্ট খোলার কথা ভাবছেন তারা ভোটার আইডি কার্ডের সাথে মিল রেখে নাম ও জন্ম তারিখ দেওয়ার চেষ্টা করুন।

৩। টু স্টেপ ভেরিফিকেশন

অনেকের কাছে প্রশ্ন হতে পারে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশনটা আসলে কি? টু স্টেপ ভেরিফিকেশন এমন একটি সিকিউরিটি সিস্টেম যার মাধ্যমে আমরা যখন ফেসবুকে লগইন করবো তখন আপনার মোবাইলে একটি মেসেজ পাঠাবে সেই মেসেজের কোড দিয়ে লগইন করতে হবে। তাহলে একবার ভাবুন এটি আমাদের কতটুকু সিকিউরিটি রক্ষা করতেছে। আমাদের ফেসবুক একাউন্টের পাসওয়ার্ড যদি কেউ জেনে ফেলে এই টু স্টেপ ভেরিফিকেশন এর ফলে লগইন করতে পারবেনা।যেভাবে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করতে হয়। প্রথমে setting & privacy ক্লিক করুন

ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায়

এরপর setting নামের একটি অপশন পাবেন সেটিতে ক্লিক করুন

ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায়

তারপর password & security নামের একটি অপশন দেখতে পারবেন সেটিতে ক্লিক করুন

ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায়

তারপর একটু নিচের দিকে আসলে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন নামের একটি অপশন পাবেন

ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায় এভাবে আপনি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন করে নিতে পারেন।

৪। লগইন ডিভাইসের লিস্ট

লগইন ডিভাইসের লিস্ট মানে হচ্ছে আপনি আপনার অ্যাকাউন্টটি যতগুলো ডিভাইসের লগইন করবেন তা সম্পূর্ণই লিস্ট আপনার কাছে দেখানো হবে। অনেক সময় আমাদের অন্যের ডিভাইসে আমাদের অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করার প্রয়োজন পড়ে। কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমরা অ্যাকাউন্টে লগআউট করে ফেলি কিন্তু একটা কথা কি জানেন? আপনি লগ আউট করার পরও ওই অ্যাকাউন্টটি ওই ডিভাইস সেভ হিসেবে থাকে যার ফলে ওই ডিভাইস থেকে যেকোনো সময় আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করতে পারবে। আবার আপনার একাউন্টের পাসওয়ার্ড যদি কেউ জেনে থাকে এবং সে যদি তার ডিভাইস দিয়ে আপনার একাউন্টে লগইন করেন তাহলে আপনি বুঝে ফেলতে পারবেন আপনার একাউন্টের পাসওয়ার্ড অন্য কেউ জানে যার ফলে আপনি দ্রুত আপনার একাউন্টে পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে ফেলতে পারবেন।যেভাবে আপনার একাউন্টে লগইন ডিভাইসের লিস্ট দেখতে পারবেন।

প্রথমে setting> password and security ক্লিক করার পর where you’r Logged in অপশন দেখতে পারবেন সেখানে see all ক্লিক করুন

তাহলে আপনার একাউন্টে লগইন হওয়া সকল ডিভাইসের নাম দেখাবে আপনি চাইলে সবগুলো ডিভাইস লগ আউট করে দিতে পারেন। লগ আউট করতে চাইলে log out off all session ক্লিক করুনফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায়

৬। অপরিচিত বন্ধু

ফেসবুকে অপরিচিত বন্ধুদের সাথে বন্ধুত্ব না করাটাই উত্তম। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায় এর মাঝে অপরিচিত বন্ধুদের সঙ্গে যুক্ত না হওয়ার কারণ কি? অবশ্যই এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ হ্যাকাররা হ্যাক করার জন্য তাদের বিভিন্ন ফেক আইডি দিয়ে আপনার সাথে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করবে এবং আপনার তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করবে। যার ফলে আপনার অ্যাকাউন্টটি হ্যাকারদের কাছে হ্যাক করা খুব সহজ হয়ে যাবে। তাছাড়াও অপরিচিত বন্ধু হলে আপনার পোষ্টের কমেন্ট সেকশনে স্পাম কমেন্ট করতে পারে। তাই চেষ্টা করুন অপরিচিত বন্ধুদের সাথে বন্ধুত্ব না করা।

৫। প্রোফাইল লক

ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায় গুলোর মাঝে প্রোফাইল লক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফেসবুকের নতুন একটি সিকিউরিটি সিস্টেম আপডেট করেছে সেটি হচ্ছে প্রোফাইল লক। যা আমাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখবে। এর কারণ হচ্ছে আমরা যদি আমাদের প্রোফাইল লক করে রাখি তাহলে আমাদের প্রোফাইলের অপরিচিত লোকজন প্রবেশ করে কোন ছবি নিতে পারবে না এবং আমাদের পোস্ট এবং ছবিতে আজেবাজে কমেন্ট করতে পারবে না। ফেসবুকে অনেক মানুষ আছে যারা অন্যের ছবি নিয়ে ফেক একাউন্ট খুলে। আপনি যদি প্রোফাইল লক করে রাখেন তাহলে এই সমস্যা থেকে রক্ষা পাবেন। যেভাবে আপনার একাউন্ট এর প্রোফাইল লক করবেন। প্রথমে সেটিংস এর মধ্যে ঢুকুন তারপর Audience and Visibility লিস্টের মধ্যে প্রোফাইল লক এর একটি অপশন দেখতে পারবেন সেখানে ক্লিক করলেই আপনার প্রোফাইল লক করতে পারবেন।

ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায়

৬। সন্দেহজনক লিংক

ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক করার মধ্যে সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হচ্ছে ফিশিং হ্যাকিং। এই ফিশিং হ্যাকিং পদ্ধতিটা হচ্ছে হ্যাকাররা আপনাকে একটা লিংক দেবে তারপর নানা ধরনের লোভনীয় কথা বলে আপনাকে সেই লিঙ্কে প্রবেশ করার জন্য বাধ্য করবে আপনি যখন সেই লিংকে প্রবেশ করবেন। ফেসবুক এর মতন আরেকটি পেইজ আসবে সেখানে আপনাকে লগইন করতে বলবে সেখানে লগইন করার সাথে সাথে আপনার সম্পূর্ণ তথ্য হ্যাকারদের হাতে চলে যাবে। তাই বিশ্বস্ত মানুষ ছাড়া সহজে কোন লিংকে প্রবেশ করবেন না।

৭। শেষ কথা

আজকে চেষ্টা করেছি ফেসবুক ভালো রাখার উপায় গুলো নিয়ে আলোচনা করার। আশা করি আপনাদের সকলের ভাল লাগেছে। ফেসবুক নিরাপদ রাখার উপায় গুলোর মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নিজেকে সচেতন থাকতে হবে।

Follow topics bangla facebook page

আরো পড়ুনঃ

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার উপায়। 2021

মন ভালো করার উপায়।2021

এন্ড্রয়েড মোবাইল পানিতে পড়লে করণীয়

Topicsbangla

জানা ও অজানা বিষয় গুলো আপনাদের কাছে তুলে ধরা আমাদের মূল লক্ষ।আমাদের সাথেই থাকুন আশা করি উপকৃত হবেন।☺☺

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button