Life Style

জীবনে সুখী হতে চাইলে এই নিয়মগুলো মেনে চলুন

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন আশা করি আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে সকলেই সুস্থ আছেন। আজকে আমি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব যা আমাদের জীবনের জন্য খুবই জরুরী।

মানুষ হচ্ছে মরণশীল, সারা জীবন এই দুনিয়াতে কেউ থাকবে না। এই স্বল্প সময়ে নিজেকে কষ্ট না দিয়ে বা কষ্ট না পেয়ে নিজেকে সুখে রাখার চেষ্টা করাটাই উত্তম কাজ। কিছু মানুষের অনেক ধন সম্পদ আছে তারপরও তারা ব্যক্তিগত জীবনে সুখী নয়, আবার অপরদিকে কিছু মানুষের তেমন ধন-সম্পদ বা টাকা-পয়সা নেই তারপরও ব্যক্তি জীবনে তারা অনেক সুখী।

সত্যি কথা বলতে টাকা পয়সা মানুষকে কখনো সুখী করতে পারে না। মানুষকে সুখে রাখার একমাত্র মালিক হচ্ছেন মহান আল্লাহ তায়ালা। তারপরও কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো আমরা সবসময় ভুল করি যার ফলস্বরূপ অসুখী জীবন নিয়ে অতিবাহিত করি। তাই আমি আপনাদের কিছু বিষয় তুলে ধরব যেগুলো এড়িয়ে চললে আপনার জীবনের সুখ খুঁজে পাবেন ইনশাল্লাহ।

প্রত্যাশা কমিয়ে ফেলুন

আমি মনে করি এই পৃথিবীতে যার জীবনে যত প্রত্যাশা কম বা চাহিদা কম তার ব্যক্তিগত জীবনে সে তত সুখী। সুখে থাকার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে প্রত্যাশা কমে ফেলতে হবে। মানুষের মাঝে লোভ-লালসা এত পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে যার কারণে দিন দিন চাহিদা বাড়ছে। আপনার জীবনে যত চাহিদা বেশি থাকবে সেই চাহিদা পূর্ণতা পাওয়ার সম্ভাবনা তত কম থাকবে। কারণ একটা মানুষের জীবনের সব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয় না। আর আপনার যদি চাহিদা কম থাকে তাহলে খুব সহজে আপনার চাহিদা গুলো পূরণ করতে পারবেন এবং খুশি থাকতে পারবেন। তাই আমি বলছি না আপনার জীবনে কোন রকম প্রত্যাশা রাখবেন না অবশ্যই প্রত্যেক মানুষের জীবনে কোন প্রত্যাশা বা চাহিদা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এত বেশি প্রত্যাশা বা চাহিদা রাখা যাবে না যা আপনার দ্বারা পূরণ করা সম্ভব নয়।

অন্যর সাথে তুলনা করবেন না

আপনার থেকে কোন ব্যক্তি খুব সুন্দর বা তার টাকা পয়সা একটু বেশি, এই ভেবে নিজেকে কখনো ছোট মনে করবেন না এবং কষ্ট পাবেন না। পৃথিবীতে প্রতিটা মানুষ তার নিজ জায়গা থেকে পারফেক্ট এবং সুন্দর।

আমরা সব সময় আমাদের থেকে যারা ধনী এবং সুন্দর তাদের সাথে তুলনা করি, যার কারণে নিজেকে দুর্ভাগ্যবান মনে করি। খেয়াল করে দেখুন আপনার থেকে অনেকেই আরো বেশি খারাপ অবস্থানে আছে সেই দিক থেকে আল্লাহতালা আপনাকে অনেক ভালো রেখেছেন। আপনার যতটুকু আছে সেইটুকু নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার চেষ্টা করুন।

হিংসা ও অহংকারী করবেন না

বর্তমানে হিংসা ও অহংকারী বিষয়টা মরণবাধী রোগের মতন আমাদের ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। হিংসা ও অহংকার করার জন্য আমরা নিজেই নিজেদের ক্ষতি করছি সেদিকে আমাদের কোন খেয়াল থাকছে না।

অন্যের ভালো দেখে যদি আপনি সবসময় হিংসা করেন তাহলে আপনি কখনো ভালো থাকতে পারবেন না। যার যোগ্যতা যত কম তার হিংসুটে মনোভাব তত বেশি। অন্য ভাল দেখে খুশি হওয়ার চেষ্টা করুন এবং সেখান থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করুন, কিভাবে সে এত ভাল পর্যায়ে গেল সে মোতাবেক নিজে পরিশ্রম করুন ইনশাল্লাহ আপনিও একদিন তার মতন হতে পারবেন। তাই অযথা অন্যের ভালো বিষয় গুলো নিয়ে হিংসা করে নিজেকে কষ্ট দেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।

আর অহংকারী পতনের মূল, অহংকারী ব্যক্তিদের কেউ পছন্দ করেন না। আজকে আপনি যে অবস্থানে রয়েছেন কালকে সে অবস্থানে থাকবেন কিনা তার কিন্তু কোন নিশ্চয়তা নেই, তাই আপনি যে বিষয়গুলো নিয়ে অহংকার করছেন সেগুলো ক্ষণস্থায়ী যে কোন সময় পরিবর্তন ঘটতে পারে।

পরিশ্রমী হোন

নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে সাজাতে চাইলে পরিশ্রমী হতে হবে। আপনার জীবনে অনেক চাহিদা কিন্তু আপনি অলসতা জীবন যাপন পার করলে সেখানে করে কখনোই পূরণ করতে পারবেন না। আমরা সফল ব্যক্তিদের কে দেখে অনেক আফসোস করি বা তাদের মতন হতে চাই কিন্তু সেই সফল ব্যক্তির পেছনে কতটুকু পরিশ্রম আছে সেটা কখনো হিসাব করি না। এমনি কেউ সফলতা অর্জন করতে পারে না তার পিছনে কঠোর পরিশ্রম থাকে। অলসতা জীবন যাপন ত্যাগ করে পরিশ্রম করুন এবং টাকা উপার্জন করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।

কাউকে ঠকাবেন না

কাউকে ঠকিয়ে হয়ত সামরিক সময়ের জন্য লাভবান হবেন। আপনি যদি প্রতিনিয়ত মানুষকে ঠকিয়ে থাকেন তাহলে নিজের কাছে নিজেকে ছোট করছেন। যেসব ব্যক্তিরা বাটপারি, মিথ্যা কথা বলা, মানুষের বিশ্বাস ভঙ্গ করে, তাদেরকে কেউ পছন্দ করেনা এবং তারা কখনো মানুষের ভালবাসা পায় না। তাই অন্যের ক্ষতি করে নিজে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করবেন না।

নিজেকে খুশি করুন

নিজেকে খুশি করার জন্য নিজেরই চেষ্টা করতে হবে। পৃথিবীতে আপনাকে কষ্ট দেওয়ার মতন মানুষের অভাব নেই কিন্তু সুখ দেওয়ার মতন মানুষের বড্ড  অভাব। তাই অন্যের দ্বারা খুশি হওয়ার চেষ্টা করবেন না কারোর অপেক্ষায় থাকবেন না। অন্যজন আপনাকে কতটুকু ভালবাসলো বা আপনাকে কি উপহার দিল এগুলোর কোন তোয়াক্কা করবেন না। নিজেই নিজেকে ভালোবাসুন নিজের খেয়াল রাখুন এবং আপনার যা প্রয়োজন সেটা নিজেকেই অর্জন করার চেষ্টা করতে হবে।

ক্ষমা করে দিন

ক্ষমা করে দেওয়া মহৎ বড় একটি গুণ। আপনার সাথে যদি কারো মনোমালিন্য বা ঝগড়া হয়ে থাকে তার সাথে ঝগড়া না বাড়িয়ে ক্ষমা করে দিন। যারা মন থেকে ক্ষমা করে দেয় তারা খুব সুখে থাকে। আপনার মনের মধ্যে যদি রাগ অভিমান পুষে রাখেন তাহলে দিন দিন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তাই যে যত বড়ই আপনার সাথে অপরাধ করুক না কেন তাকে ক্ষমা করে দিন।

মাদক ত্যাগ করুন

অনেকের জীবনে এত পরিমাণে হতাশ, ব্যর্থতা রয়েছে এসব হতাশার কাটানোর জন্য মাদক গ্রহণ করে থাকেন। অনেকে ভেবে থাকেন ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে মাদক গ্রহণ করা। এটি পুরোপুরি ভাবে ভুল কারণ মাদক গ্রহণের ফলে আপনি সামরিক সময়ের জন্য হয়তো প্রশান্তি পাবেন কিন্তু দিন দিন নেশাগ্রস্ত হয়ে যাবে যা আপনার সমাজের ও পারিবারিকের জন্য হুমকি স্বরূপ। আপনি আশেপাশে খেয়াল করে দেখতে পারবেন যারা মাদকাসক্ত তাদের জীবনের কোন কূলকিনারা নেই তারা খুব কষ্টদায়ক জীবন যাপন করে। তাই আপনার জীবনে যতই হতাশা আসুক বা সমস্যা আসুক না কেন আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে ধৈর্য ধারণ করুন, এক সময় আল্লাহ তায়ালা আপনার সকল সমস্যা সমাধান করে দিবেন, ইনশাআল্লাহ।

পজেটিভ চিন্তা করুন

কথায় রয়েছে দৃষ্টিভঙ্গি বদলান জীবন বদলে যাবে, এর মানে আপনার জীবনকে যদি সুন্দর করে তুলতে চান তাহলে সবসময় পজিটিভ চিন্তাভাবনা করতে হবে। যারা নেগেটিভ চিন্তাভাবনা নিয়ে সবসময় থাকে তারা ভিতর দিক থেকে বা বাহির দিক থেকে কোনভাবেই ভালো থাকতে পারে না। তাই অন্যকে খারাপ ভাবার আগে বা কোন কিছু নেগেটিভ ভাবে নেওয়ার আগে সেটাকে পজেটিভ ভাবে ভেবে দেখুন, আশা করি আপনার জীবনের সুখের মূল খুঁজে পাবেন।

ইবাদত করুন

ইবাদত হচ্ছে সুখের মূল উৎস। আপনার জীবনে যদি অনেক হতাশা ও সমস্যা গ্রাস  করে তাহলে ইবাদত করে আল্লাহ তাআলার কাছে সাহায্য চান। ইবাদত করার মাধ্যমে নিজের মনের মধ্যে অন্যরকম প্রশান্তির হাওয়া বয়ে যায়। আমার কথা যদি বিশ্বাস না হয়, আপনি দুই মাস একটানা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে দেখুন আপনার জীবনে কোন ডিপ্রেশন বা হতাশা থাকবে না। নামাজ পড়ে আল্লাহতালার কাছে দোয়া চান এবং সাহায্য চান আল্লাহ তা’আলা আপনার সকল সমস্যার সমাধান করে দেবেন। ইনশাল্লাহ

আজকে এই পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন পরবর্তীতে অন্য কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবো ধন্যবাদ

Follow topics bangla facebook page

আরো পড়ুনঃ

ডিলিট করা ফেসবুক পোস্ট কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় আসুন জেনে নেই

বিকাশে স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

ঘরে বসে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করুন

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করুন।

ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে নিন

Topicsbangla

জানা ও অজানা বিষয় গুলো আপনাদের কাছে তুলে ধরা আমাদের মূল লক্ষ।আমাদের সাথেই থাকুন আশা করি উপকৃত হবেন।☺☺

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button