সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করুন
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করার উপায় সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আজকের পোস্ট আপনার জন্য।
আমরা কমবেশি সবাই ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে শুনেছি। ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষুদ্র একটা অংশ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। আগে একটা সময় ছিল যখন মানুষ টেলিভিশন ও রেডিও বা পত্রিকা সহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতো।
কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তি উন্নতির সাথে সাথে সব কিছুর পরিবর্তন ঘটেছে। তার সাথে বিজ্ঞাপনের মাধ্যম গুলোর মধ্যে পরিবর্তন এসেছে। আগে মানুষ টেলিভিশন বা রেডিও বেশি শুনতো বা দেখতো কিন্তু বর্তমানে টেলিভিশন ও রেডিও দেখা বা শোনা মানুষের মধ্যে কমে গিয়েছে।
এখন মানুষ অনলাইনে সময় কাটাতে বেশি পছন্দ করেন। অনলাইনে অনেকগুলো সোশ্যাল মিডিয়া রয়েছে যেগুলোতে মানুষ তাদের কাছের মানুষের সাথে যোগাযোগ করার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বিনোদনমূলক কন্টেন দেখার মাধ্যমে সময়গুলো পার করে।
যার ফলে দিন দিন সোশ্যাল মিডিয়ার সাইটগুলোতে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। এত বেশি ব্যবহারকারীর হওয়ার কারণে এখানে অনেক বড় একটি মার্কেটিং করার সেক্টর তৈরি হয়েছে।
আমাদের মাঝে কিছু মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে যোগাযোগ বা বিভিন্ন ধরনের ভিডিও দেখার মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করে। আর অপরদিকে কিছু মানুষ এই মাধ্যম গুলো ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে। আজকে আপনাদের সেই সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি এবং কিভাবে করে, বা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে কিভাবে টাকা আয় করা যায়।
এক পলকে সম্পুর্ন পোস্ট
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি?
একদম সহজ ভাষায় বলতে গেলে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং(SMM) এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম গুলো। যেমনঃ Facebook, YouTube,, Twitter, Instagram,Tik tok সহ আরো যেগুলো জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া সাইট রয়েছে সেগুলোর মধ্যে সক্রিয় ব্যবহারকারীদের কাছে নিজের ব্র্যান্ডের পণ্য সম্পর্কে তুলে ধরার প্রক্রিয়াকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলা হয়।
বর্তমানে কয়েক বছরের ব্যবধানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপক প্রসার ঘটেছে যা লক্ষণীয়। ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার মাধ্যমে খুব সহজেই অনেক মানুষের কাছে বিজ্ঞাপন প্রেরণ করা যায়।
আগে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য নানা ধরনের কষ্ট পোহাতে হতো। কিন্তু বর্তমানে শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোতে একাউন্ট খোলার মাধ্যমেই আপনার প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কিভাবে করে?
বর্তমান সময়ে যেসব সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলো অনেক জনপ্রিয় লাভ করেছে এবং এই প্লাটফর্ম গুলোর ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এগুলোকে কাজে লাগিয়ে আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারবেন। যেসব সোশ্যাল প্লাটফর্ম গুলো ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি সেই প্ল্যাটফর্মগুলোতে কিভাবে মার্কেটিং করবেন সে সম্পর্কে আমি জানানোর চেষ্টা করবো
১। ফেসবুকের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করুন
বর্তমানে এমন কোন মানুষ রয়েছে যে ফেসবুকের নাম শুনে নাই বয়স্ক লোক থেকে শুরু করে কিশোর বয়সের বাচ্চা ও ফেসবুক সম্পর্কে জানে। ফেসবুক এতটা জনপ্রিয় একটি যোগাযোগ মাধ্যম যেটা প্রায় লোকই ব্যবহার করে থাকেন। এর ফলে ফেসবুকের মাধ্যমে মার্কেটিং করলে খুব লাভজনক হবে।
ফেসবুকে দুই ভাবে মার্কেটিং করতে পারবেন একটি হচ্ছে ফ্রি এবং পেইড মার্কেটিং
ফেসবুকে মার্কেটিং করতে হলে প্রথমে আপনাকে একটি ফেসবুক পেজ খুলতে হবে।
তারপর আপনি যদি ফ্রি মার্কেটিং করতে চান তাহলে সে পেজের ফলোয়ার বা লাইক বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। যখন আপনার পেজের ফলোয়ার বা লাইকের সংখ্যা বেড়ে যাবে তখন আপনার প্রোডাক্টের সম্পর্কে পেজের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের জানাবেন। এটা অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে যায় কারণ একটি পেজে অনেক পরিমাণে ফলোয়ার বা লাইক তৈরি করা সহজ বিষয় নয়। আপনি যদি চান আপনার প্রোফাইলটি পেজে কনভার্ট করতে , তাহলে নিচের আর্টিকেলটি পড়ে নিন
ফেসবুক প্রোফাইল পেজে কনভার্ট করার উপায়
আরেকটি মাধ্যমে আপনি ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন সেটা হচ্ছে (paid advertising) ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আমাদের জন্য এই সুযোগটি রেখেছে.। আপনি যদি একটা ফেসবুক পেজ খোলার পর সেখানে ফলোয়ার্স বা লাইকের সংখ্যা কম হয়ে থাকে। কোন চিন্তার কারণ নেই কারণ কিছু টাকার বিনিময়ে (paid advertising) করতে পারবেন। এর কিছু সুবিধা রয়েছে তা হচ্ছে কত বয়সসীমা মানুষের কাছে আপনার বিজ্ঞাপনগুলো পৌঁছাতে চান এবং আপনি যে প্রোডাক্ট সম্পর্কে তাদের জানাতে চান সেটা টার্গেট অডিয়েন্স করে বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন যার ফলে সে ব্যবহারকারী গুলো আপনার বিজ্ঞাপন দেখার প্রতি আগ্রহ থাকবে। এর ফলে আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানার পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের মধ্যে ক্রয় করার আগ্রহ আরো বেড়ে যাবে।
২। ইউটিউবের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করুন
বেশিরভাগ মানুষের এখন ইউটিউবে ভিডিও দেখার মাধ্যমে সময় কাটাতে পছন্দ করেন। আগে মানুষ টেলিভিশন দেখার প্রবণতা বেশি ছিল কিন্তু সময়ের সাথে সেটি পরিবর্তন হয়ে ইউটিউব ভিত্তিক হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে ইউটিউব অনেক বড় একটা ভিডিও শেয়ার করার মাধ্যম। যেখানে কোটি কোটি মানুষ তাদের ভিডিওগুলো শেয়ার করছে এবং তার থেকে বেশি মানুষ সেই ভিডিও গুলো দেখছে। ইউটিউবে এত বেশি মানুষের সমাগমের কারণে এখানে মার্কেটিং করার একটি বিশাল সেক্টর তৈরি হয়েছে।
বর্তমানে বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানিগুলো তাদের প্রোডাক্ট গুলোর ইউটিউব এর মাধ্যমে মার্কেটিং করছে।
আপনার পণ্যের ইউটিউব এ মার্কেটিং করতে চাইলে প্রথমে ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলতে হবে এবং সেই চ্যানেলে প্রচুর পরিমাণে সাবস্ক্রাইব থাকতে হবে। আপনার চ্যানেলে যদি সাবস্ক্রাইব বেশি পরিমাণে না থাকে তাহলে চ্যানেলের ভিডিও গুলোতে ভিউ বেশী হবেনা। আর ভিউ বেশি না হলে সেই চ্যানেলে মার্কেটিং বা প্রোডাক্ট সম্পর্কে বলে কোন লাভ নেই।
অথবা আপনি চাইলে ইউটিউবে কোন বড় সেলিব্রেটি যার অনেক সাবস্ক্রাইব এবং ভিউয়ার্স রয়েছে তার সাথে যোগাযোগ করে। আপনার প্রোডাক্টের সম্পর্কে যদি সে বলে তার ইউটিউব চ্যানেলে, তাহলে কিন্তু আপনার প্রোডাক্টের অনেক বড় মার্কেটিং হবে। এর জন্য অবশ্যই সেই ইউটিউব চ্যানেলের মালিককে টাকা প্রদান করতে হবে।
৩। ইনস্টাগ্রাম মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
ইনস্টাগ্রামে মানুষ বেশিরভাগ ছবি শেয়ার করে থাকেন তার পাশাপাশি বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করেন । এবং এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেশি। আপনি চাইলেই ইন্সটাগ্রাম এর মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারবেন। এর জন্য ইনস্টাগ্রামে একটি অ্যাকাউন্ট ওপেন করার পরে সেই একাউন্টে ফলোয়ার বাড়ানোর চেষ্টা করুন। এরপর আপনার প্রোডাক্টের মার্কেটিং করুন।
৪। টুইটারের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করুন
টুইটার সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানিগুলো টুইটারের মাধ্যমে মার্কেটিং এর কাজ করেন। আপনিও টুইটর মাধ্যমে মার্কেটিং করতে পারবেন। এজন্য টুইটারে প্রথমে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে তারপর সেখানে ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে টুইট করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
আমি চেষ্টা করেছি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া সাইট গুলোতে কিভাবে মার্কেটিং করতে পারেন তার হালকা ধারণা দেওয়ার।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সুবিধা কি?
১।ঝামেলামুক্ত
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে অনেক দিক থেকে সুবিধা পাবেন। আপনি যদি খুব ছোটখাটো ব্যবসায়িক হয়ে থাকেন। এবং আপনার প্রোডাক্টের মার্কেটিং করতে চান তাহলে অন্য ভাবে মার্কেটিং করতে গেলে বিভিন্ন ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়।
আপনি চাইলেই টেলিভিশনে আপনার প্রোডাক্ট এর সম্পর্কে মার্কেটিং করতে পারবেন না। কারণ আপনি একজন ছোট ব্যবসায়ী টেলিভিশনে মার্কেটিং করতে গেলে প্রচুর পরিমাণে টাকার প্রয়োজন হয়।
তাই সোশ্যাল মিডিয়া সাইট গুলো ব্যবহার করে যে কোন বয়সের মানুষ যে কোন ব্যবসার মার্কেটিং করতে পারবেন। ফেসবুকে অল্প কিছু টাকার মাধ্যমে প্রচুর মানুষের কাছে মার্কেটিং করতে পারবেন।
২। টার্গেট জনগণ
ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার টার্গেট করে মার্কেটিং করতে পারবেন। টার্গেট মার্কেটিং মানে হচ্ছে আপনি যে বিষয় বা যেই প্রোডাক্টগুলোর মার্কেটিং করতে চাচ্ছেন এবং ফেসবুকে যেই ব্যবহারকারীদের মধ্যে সেই প্রোডাক্ট গুলোর প্রতি আগ্রহী আছে তাদের সামনে আপনার প্রডাক্ট সম্পর্কে যাবে। এর সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে অল্প সংখ্যক মানুষের কাছে মার্কেটিং করলেও আপনার বিক্রয় বেড়ে যাবে, কারন সে অল্প সংখ্যক মানুষ আপনার প্রোডাক্টের ক্রয় করার প্রতি আগ্রহ থাকবে।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করুন
যেহেতু এখানে মার্কেটিং জড়িত রয়েছে সেক্ষেত্রে আয় হবে না এমন তো হয় না। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন দিক থেকে আয় করা সম্ভব। অনেকেই আছেন কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়াম মার্কেটিং করতে হয় সেটি জানেন না, আপনি চাইলে টাকার বিনিময় তাদেরকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করিয়ে দিতে পারেন। বর্তমানে অনলাইনে আয় করার যে সাইটগুলো রয়েছে fiver, upwork সহ আরো অন্যান্য সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলে। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য গিগ খুলতে পারেন। তারপর মানুষ আপনার থেকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করিয়ে নেওয়ার ফলে টাকা প্রদান করে থাকবে যেখান থেকে ভালো টাকা উপার্জন করা সম্ভব।
আপনি যদি কোন ব্যবসায়িক হয়ে থাকেন তাহলে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার ব্যবসার প্রোডাক্ট গুলোর বিজ্ঞাপন দেয়ার মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। বর্তমান মানুষেরা অনলাইনে কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন। সৎভাবে অনলাইনে বিজনেস করলে আপনার ব্যবসার পরিধি যেরকম বৃদ্ধি পাবে তার পাশাপাশি আয় বৃদ্ধি পাবে।
Follow topics bangla facebook page
আরো পড়ুনঃ