Android Tips

মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তথ্য ও প্রযুক্তি উন্নয়নের ফলে বর্তমান মোবাইল ডিভাইস গুলো অনেক শক্তিশালী হয়ে গিয়েছে। যার কারণে শুধু কথা বলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। কথা বলার পাশাপাশি মোবাইল দিয়ে আরো বিভিন্ন ধরনের কাজ খুব সহজে করা যাচ্ছে। যার কারণে মানুষ বেশিরভাগ সময় মোবাইলের পিছনে ব্যয় করছে । আমাদের জন্য অতিরিক্ত কোন কিছুই ভাল নয় লিমিটের মধ্যে থেকে ব্যবহার করলে তার আসল মজা উপভোগ করা যায়। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করার ফলে এটি এক সময় নেশাই রূপ ধারণ করে। তখন মোবাইল ছাড়া কোন কিছুই ভালো লাগেনা। এবং আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলোতে ব্যাঘাত ঘটায়। তাই এই মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে কিছু টিপস শেয়ার করবো যেগুলো ফলো করলে মোবাইলের আসক্তি থেকে বের হতে পারবেন।

মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

বর্তমানে মোবাইল আমাদের দৈনিক জীবনের সাথে এমন ভাবে জড়িয়ে গেছে দিনের বেশিরভাগ সময়ই মোবাইলের পিছনে চলে যায়। যা আমাদের শারীরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং পাশাপাশি আমাদের কাজের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। তাই অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার থেকে নিজেকে বিরত রাখার জন্য যেই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করবেন।মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

১।নিজেকে ব্যস্ত রাখুন

মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় গুলোর মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রাখার উপায় সব থেকে কার্যকরী উপায়। এর কারণ হচ্ছে যখন আপনি বেশি ফ্রি থাকবেন তখন আপনার সময় কাটানোর জন্য মোবাইলকে বেছে নেবেন। তাই নিজেকে ভালো কোন কাজে ব্যস্ত রাখুন। যদি আপনার হাতে তেমন কাজ না থাকে তাহলে বাইরে ঘুরতে যান। বন্ধুদের সাথে সময় কাটান আড্ডা দিন। এর ফলে আপনার মন মানসিকতা অনেক ভালো থাকবে। শারীরিক ও মানসিকভাবে অন্যরকম প্রশান্তি অনুভব করবেন। তাই যেই সময়গুলোতে আপনার হাতে কোনো কাজ থাকে না তখন বন্ধুবান্ধবের সাথে বা বাইরে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।

আরো পড়ুনঃ  স্মার্টফোনের ক্ষতিকর দিক গুলো দেখে নিন

২।অতিরিক্ত অ্যাপ গুলো ডিলিট করুন

মোবাইল আপনি যত অ্যাপ রাখবেন ততো সেগুলো ব্যবহার করার জন্য ইচ্ছা জাগবে। ফেসবুক ইউটিউব এর মতন অ্যাপগুলো আমাদের সময়গুলো কেড়ে নিচ্ছে তার পাশাপাশি বর্তমানে টিকটক, লাইকি কিছু অ্যাপ বের হয়েছে যেগুলোতে মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা ভিডিও দেখে সময় পার করে দিচ্ছে। তাই এই ধরনের অ্যাপ গুলো ডিলিট করে দিন। মোবাইলের আসক্তি থেকে নিজেকে বাঁচাতে চাইলে ফেসবুক টুইটার এগুলো ডিলিট করে দিতে পারেন।

যখন আপনার মোবাইল থেকে অতিরিক্ত অ্যাপ গুলো ডিলিট করে দিবেন। কিছুদিন পর খেয়াল করে দেখবেন অনেকাংশ মোবাইলের প্রতি আসক্ত কমে গিয়েছে

৩।রুটিন তৈরি করুন

রুটিন মাফিক জীবন পরিচালনা করার মাঝে অন্যরকম আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়। যা অনিয়ন্ত্রিত জীবনের মাঝে খুঁজে পাওয়া যায় না। রুটিন অনুসারে জীবন পরিচালনা করলে সময়ের কাজ গুলো সময় মত হয়ে যায়। তাই নিজের জীবনের জন্য রুটিন তৈরি করে ফেলুন। আপনার কাজের সময় গুলো ভাগ করে নিন। সব কাজ গুলো যদি সময় অনুসারে ভাগ করে নেন তাহলে কিন্তু মোবাইল ব্যবহার করার জন্য বেশি একটা সময় পাবেন না। যার ফলে কাজগুলো পরিপূর্ণভাবে সম্পূর্ণ হবে এবং মোবাইলের প্রতি আসক্তি অনেক কমে যাবে।

৪।সব সময় মোবাইল সাথে রাখবেন না

বর্তমান সময়ে এমন একটা পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে সব সময় আমাদের সাথে মোবাইল ফোন রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু এটা করা যাবে না আপনি যখন কোন কাজ করার সিদ্ধান্ত নিবেন তখন চেষ্টা করবেন মোবাইল দূরে সরিয়ে রাখার জন্য। কারণ একবার যদি আপনার মোবাইলের প্রতি মনোযোগ চলে যায় তাহলে কিন্তু অনেক সময় আপনার থেকে কেড়ে নেবে তাই চেষ্টা করুন মোবাইল ফোনটি দূরে রেখে কাজ করার।

অনেকে আছে ঘুমানোর সময় মোবাইল পাশে রেখে ঘুমায়। যা একদম ঠিক নয় ঘুমানোর জন্য নির্দিষ্ট একটি টাইম সেট করে দিন। তারপর সেই টাইম অনুযায়ী ঘুমানোর চেষ্টা করুন অবশ্যই ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন অন্য কোথাও রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। মোবাইল ফোন যখন আপনার পাশে রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করেন তখন হঠাৎ কোনো নোটিফিকেশনের শব্দে মোবাইলের প্রতি মনোযোগ চলে যেতে পারে মোবাইল একটু চেক করার ইচ্ছা জাগতে পারে আর সেই একটু ইচ্ছা থেকে দীর্ঘ সময় মোবাইলের পিছনে ব্যয় হবে। যা আপনার ঘুমানোর সময় কমিয়ে দিয়ে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবে।

বর্তমানে মানুষ মোবাইলের প্রতি এত বেশি আসক্ত হয়ে পড়েছে যে খাওয়াদাওয়ার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে নিজেকে সংযত রাখতে পারেনা। এবং আপনি শুনলে অবাক হয়ে যাবেন অনেকেই বাথরুমে যাওয়ার সময় মোবাইল ফোন সাথে করে নিয়ে যায়। তাহলে একবার চিন্তা করে দেখুন মোবাইল আমাদের জীবনের সাথে কতটা খারাপ ভাবে জড়িয়ে গেছে। তাই সব সময় মোবাইল সাথে না রাখার চেষ্টা করুন। অতি প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই।

৫। ঘড়ি ব্যবহার করুন

আমরা সবাই জানি মোবাইলের টাইম দেখা যায়। যার ফলে বর্তমানে ঘড়ির ব্যবহার অনেক কমে গেছে। টাইম দেখার জন্য আমরা মোবাইল ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এটা আমাদের মোবাইলের প্রতি আরো বেশি নির্ভরশীল করে তুলছে। আপনি যখন সময় দেখার জন্য মোবাইল ব্যবহার করবেন। তখন আপনি খেয়াল করে দেখবেন একটু সময় দেখার ছলে অনেক বেশি সময় কিন্তু মোবাইলে পিছনে ব্যয় করে ফেলছেন। কারণ একটু টাইম দেখার জন্য মোবাইল অন করলেও অন্য কোন নোটিফিকেশনের কারণে খুব সহজে আবার আপনি মোবাইলের মাঝে ডুবে যাচ্ছেন। তাই সময় দেখার জন্য মোবাইল ফোন নয় ঘড়ি ব্যবহার করুন।

অনেকে আছে যারা মোবাইল ফোন অ্যালার্ম  কাজে ব্যবহার করে। তা কিন্তু একদম ঠিক নয় অ্যালার্মের শব্দ শুনে আপনি ঠিকই ঘুম থেকে উঠবেন কিন্তু সর্বপ্রথম আপনার মনোযোগ যাবে মোবাইলের উপর। আর তখন মোবাইল ব্যবহার করার জন্য ইচ্ছা জাগবে। এবং মোবাইল ব্যবহার করতে থাকবেন তার সাথে সময় গুলো নষ্ট করতে থাকবেন।

তাই অ্যালার্মের জন্য  বা সময় দেখার জন্য ঘড়ি ব্যবহার করুন মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না।

৬।অ্যাপ ব্যবহার করুন

আপনি যদি মোবাইলের প্রতি অনেক বেশি আসক্ত হয়ে পড়েন। দিনে ৬ থেকে ৭ ঘন্টার বেশি মোবাইলের পিছনে সময় ব্যয় করে থাকেন। এবং এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে চাচ্ছেন। তাহলে এই টিপস আপনার জন্য খুবই কার্যকরী হবে। বর্তমানে কিছু অ্যাপ আছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমিয়ে ফেলতে পারবেন। তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য অ্যাপ হচ্ছে Keep me out এই অ্যাপটি ডাউনলোড করতে চাইলে নিচের লিংকে ক্লিক করুন

ডাউনলোড

এই অ্যাপটি দারুণভাবে কাজ করে এই অ্যাপটি ব্যবহার করার ফলে টাইম সেট করে আপনার ফোন লক করে রাখতে পারবেন। যত সময়ের জন্য  টাইম সেট করে রাখবেন ওই সময় পর্যন্ত মোবাইল কোন কাজ করবে না একদম লক হয়ে থাকবে। ব্যাপারটা খুব দারুণ না! আপনার ইচ্ছা হইলে মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন না যতক্ষন পর্যন্ত সেই টাইম শেষ না হচ্ছে। আপনার কাজের সময় গুলোতে টাইম সেট করে রেখে দিন। আর নিশ্চিন্তে আপনার কাজগুলো সম্পূর্ণ করুন।

ইমারজেন্সি কল করার জন্য বা ইমারজেন্সি প্রয়োজন বাটন মোবাইল গুলো ব্যবহার করতে পারেন। সেই মোবাইল শুধু কথা বলার জন্য ব্যবহার করবেন।

মোবাইল আসক্তি মুক্তির উপায় গুলোর মধ্যে এই টিপসটি খুবই কার্যকরী। যারা খুব বেশি মোবাইলের প্রতি আসক্তি তারা যদি এই টিপস ফলো করেন আশা করা যায় খুব শীঘ্রই আপনারা মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমিয়ে ফেলতে পারবেন।

৭। মনোভাব পরিবর্তন করুন

মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাতে হলে এত টিপস এত রুলস জেনে কোন লাভ নেই। সর্বপ্রথম যেটা প্রয়োজন তা হচ্ছে নিজের মনোভাবকে স্থির করতে হবে। আপনি নিজেকে একবার প্রশ্ন করে দেখেন আমি কিসের জন্য আমার গুরুত্বপূর্ণ সময় গুলো মোবাইলের পিছনে নষ্ট করবো।

একটু ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখুনতো সুন্দর এই পৃথিবীতে আমার সময় গুলো শুধুমাত্র মোবাইলের পিছনে দিয়ে দিব? তা একদমই না এ জীবন খুব স্বল্প সময়ের তাই এই সময় গুলো ভালো কোন কাজে ব্যয় করুন তাহলেই জীবনের আসল মজা উপভোগ করতে পারবেন। তাই আজ থেকে মনোভাব স্থির করুন অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন এবং নিজেকে ভালোবাসবেন নিজের জন্য সময় ব্যয় করবেন।

Follow topics bangla facebook page

Topicsbangla

জানা ও অজানা বিষয় গুলো আপনাদের কাছে তুলে ধরা আমাদের মূল লক্ষ।আমাদের সাথেই থাকুন আশা করি উপকৃত হবেন।☺☺

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button