BOESL বিদেশি নতুন নিয়োগ পদ্ধতি জেনে নিন
BOESL এর পূর্ণরূপ হলো বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড।BOESL হলো দেশের জনশক্তিকে বৈদেশিক কর্মসংস্থানে প্রেরণের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সরকারি সংস্থা।এই সংস্থাটি ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।এই সংস্থা টি বৈধ উপায়ে এবং সাশ্রয়ী খরচে প্রবাসে চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে।এ সংস্থাটি নিয়মিত বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক চাহিদা পায় এবং সেই অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকে।আজকের ব্লগে আমরা BOESL বিদেশি নতুন নিয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবো।
এক পলকে সম্পুর্ন পোস্ট
BOESL বিদেশি নতুন নিয়োগ পদ্ধতি
এ সংস্থাটির মাধ্যমে বিদেশে বিভিন্ন পদে কাজ করার জন্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়।মালয়েশিয়া, জর্ডান, এবং ব্রুনাইসহ আরও কিছু দেশে নতুন নিয়োগ চলছে। এসব নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ সরকারি পর্যায়ে পরিচালিত হওয়ায় এখানে প্রতারণার ঝুঁকি নেই এবং খরচ অনেক কম।BOESL এর মাধ্যমে বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য তিনটি ধাপ পার করতে হবে আপনাকে।
- প্রার্থীদের BOESL এর ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফর্ম ডাউনলোড করার পর তা আপনাকে যথাযথভাবে পূরণ করে নিতে হবে।এবং এর সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট, পাসপোর্টের কপি, জন্মসনদ ইত্যাদি সংযুক্ত করতে হবে।
- আবেদন থেকে নির্বাচিত প্রার্থীরা লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।এ পরীক্ষা সাধারণত কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে হয়।লিখিত পরীক্ষার পর ব্যবহারিক পরীক্ষা সেই কাজের দক্ষতা যাচাই করে, যা প্রার্থীকে পেশাগত কাজের জন্য প্রস্তুত করে।
- লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষায় সিলেক্ট হওয়ার পর আপনাকে মৌখিক পরিক্ষায় অংশগ্রহন করতে হবে।মৌখিক পরীক্ষায় প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, এবং পেশাদারিত্ব যাচাই করা হয়। সফলভাবে মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হলে প্রার্থীকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়।
এই প্রক্রিয়ায় সফল প্রার্থীরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বৈদেশিক কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হতে পারেন।BOESL এ নিয়োগ পদ্ধতিতে সবচেয়ে বেশি মালেশিয়ায় নিয়োগ করা হয়। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাথে চুক্তি অনুযায়ী ১০,০০০ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি একটি এককালীন প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয় যা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের সংকট মেটাতে সাহায্য করে।
নিয়োগের যোগ্যতা
বোয়েসেল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুসারে লোক নিয়োগ করছে। এর মধ্যে জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি, ডিগ্রি পাস প্রার্থীরা যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। এছাড়াও নির্দিষ্ট কিছু পদের জন্য প্রার্থীদের কম্পিউটার জ্ঞান এবং টেকনিক্যাল দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। প্রার্থীদের অবশ্যই শারীরিকভাবে সক্ষম হতে হবে এবং নির্ধারিত বয়সের মধ্যে থাকতে হবে।
BOESL এর গুরুত্ব
বোয়েসেল প্রায় ৪ দশক ধরে দেশের যুব সমাজকে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়ে আসছে। এটি বিদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বিশেষত প্রবাসী আয়ের মাধ্যমে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে এবং দেশের কর্মহীন যুবকদের বৈদেশিক আয়ের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার পথ সুগম হচ্ছে।
এ সংস্থার মাধ্যমে বিদেশে চাকরির জন্য প্রার্থী নির্বাচন একটি সাশ্রয়ী এবং নিরাপদ উপায়। বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে যেতে সাধারণত ৩.৫ থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয় যেখানে এ সংস্থার মাধ্যমে এই খরচ মাত্র ৪২,০০০ টাকা। এ ছাড়া বেসরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সময় প্রতারণার ঝুঁকি থাকে, যেখানে প্রার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়। কিন্তু BOESL এর মাধ্যমে সরকারিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় বলে এখানে এই ধরনের প্রতারণার সুযোগ থাকে না।
বিভিন্ন দেশে নিয়োগ এবং কাজের সুযোগ
এ পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন খাতে কাজের জন্য বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে যার মধ্যে কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা, এবং নির্মাণ খাতে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে। প্রার্থীরা মাসে ১,৫০০ মালয়েশিয়ান রিংগিত যা বাংলাদেশ অনুযায়ী প্রায় ৩৫,০০০ টাকা বেতন পাবেন যা তাদের জন্য আর্থিক স্বচ্ছলতা আনার সুযোগ করে দেবে। এর পাশাপাশি কর্মীরা অতিরিক্ত কাজ করে ওভারটাইম আয়ের সুযোগও পাবেন যা তাদের মোট আয় বাড়াতে সাহায্য করবে।
মালয়েশিয়া ছাড়াও ব্রুনাই এবং জর্ডানের মতো দেশগুলোতেও BOESL এর মাধ্যমে বিভিন্ন পদে নিয়োগ করা হচ্ছে। ব্রুনাইতে সাধারণত নির্মাণকর্মী এবং যন্ত্রচালক পদে নিয়োগ চলছে। এখানে যারা নিয়োগপ্রাপ্ত হচ্ছেন, তাদের জন্য নির্দিষ্ট দক্ষতার প্রয়োজন রয়েছে। যথাযথ দক্ষতা অর্জন করা প্রার্থীদের জন্য এ ধরনের কাজ খুবই লাভজনক হতে পারে, কারণ ব্রুনাইতে শ্রমিকদের জন্য আকর্ষণীয় বেতন ও সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
BOESL বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরকার-নিয়ন্ত্রিত এই সংস্থা প্রার্থীদের জন্য সাশ্রয়ী খরচে এবং প্রতারণামুক্ত উপায়ে বিদেশে চাকরির সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, এবং অন্যান্য দেশের জন্য নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বোয়েসেল বাংলাদেশের যুবকদের জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরী করতে সহায়তা করে।
আরো পড়ুনঃ
ফ্রান্সে অভিবাসী বৈধকরণের উপায়