Life Style

সহজ কৌশলে পড়া মনে রাখার উপায়

আজকে পড়া মনে রাখার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। আপনার কি পড়া মনে থাকে না? এটিকে বড় কোন সমস্যা মনে করা প্রয়োজন নেই কারণ পড়া মনে না থাকাটাই স্বাভাবিক। আমাদের সবার ব্রেনের কার্যক্ষমতা সমান নয়। কেউ একটা জিনিস অনেকদিন যাবত মনে রাখতে পারে আবার কেউ পারেনা।

যাদের রেজাল্ট অনেক ভালো আমরা তাদেরকে ভালো ছাত্র এবং অনেক মেধাবী মনে করি কিন্তু তাদেরকে একটি বারের জন্য প্রশ্ন করে দেখুন তো তারা কি পড়াশোনা না করে এত ভালো রেজাল্ট করেছে? কখনও না কারণ পড়াশোনা ছাড়া ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব না, আসলে তারা কিছু কৌশল জানে যেগুলো অনুসরণ করে ভালো রেজাল্ট করতে পারে। অনেকেই আছেন যারা পড়াশোনার পিছনে অনেক সময় নষ্ট করেন তারপরও আশানুরূপ রেজাল্ট আসে না। তাদের জন্য আজকে পড়া মনে রাখার উপায় সম্পর্কে কিছু টিপস শেয়ার করব যে গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে পড়া মনে রাখা সহজ হয়ে যাবে।

পড়া মনে রাখার উপায়

পড়া মনে রাখার জন্য কিছু কৌশল রয়েছে যেগুলো অবলম্বন করলে পড়া মনে রাখতে সহজ হয়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক পড়া মনে রাখার উপায় গুলোর সম্পর্কে

১। খিদা অবস্থায় পড়াশোনা করবেন না

ক্ষুদা অবস্থায় আমরা কোন কিছুতেই ঠিক ভাবে মনোযোগ দিতে পারিনা। কারণ ক্ষুধা অবস্থায় আমাদের শরীর ঠিক ভাবে কাজ করে না এবং ব্রেন অনেক ধীর গতিতে কাজ করে। যার ফলে খিদা অবস্থায় পড়াশোনা করতেও তেমন  ভালো লাগে না। তাই পড়াশোনার আগে হালকা কিছু নাস্তা করে নেন তারপর পড়াশোনা শুরু করুন এর ফলে পড়ার  প্রতি ভালোভাবে মনোযোগ দিতে পারবেন।

২। হাঁটুন  বা ব্যায়াম করুন

পড়ার আগে যদি আপনি হালকা ব্যায়াম করে নিন বা দশ মিনিট হাঁটা চলা করেন তাহলে আপনার ব্রেনের রক্ত সঞ্চালন হবে যা পড়া মনে রাখার জন্য সাহায্য করবে। পড়ার আগে ব্যায়াম করার কারণে শরীরে আলাদা এনার্জি অনুভব হবে। যার ফলে পড়ায় গভীর ভাবে মনোযোগ দিতে পারবেন।

৩। বিরতি দিয়ে পড়ুন

কিছু মানুষ রয়েছে যারা একটানা তিন থেকে চার ঘণ্টা শুধু পড়তে থাকে। এভাবে টানা দীর্ঘ সময় পড়া উচিত নয় এর ফলে আপনার পড়ার প্রতি বিরক্তি চলে আসবে এবং দীর্ঘ সময় পড়ার কারণে আমাদের ব্রেন এতগুলো তথ্য একসাথে সংরক্ষণ করতে হিমশিম খেয়ে যায়। যার কারণে পড়া ভুলে যায়। তাই কোন পড়া মনে রাখার জন্য ৩০ মিনিট পরপর ৫ মিনিটের জন্য বিরতি নিন। এর ফলে ব্রেন হালকা বিশ্রাম পাবে তার সাথে পড়া মনে রাখতে সহজ হবে।

৪। রিভিশন দিন

যারা নিজেদেরকে অনেক বেশি চালাক মনে করে আসলে তারাই বোকা। অনেকে মনে করে আমার ব্রেন অনেক ভালো একবার পড়লেই মনে রাখতে পারব, কিন্তু আসলে বিষয়টা কি এত সহজ? উদাহরণস্বরূপ পাঁচ বছর আগে একটি মানুষের সাথে আপনার দেখা হয়েছিল এবং কথা হয়েছিল সে মানুষটির নাম যদি আপনাকে বলা হয় তাহলে কিন্তু আপনি তাকে মনে করতে পারবেন না। আবার আরেকটি মানুষের সাথে আপনার দশ বছর আগে থেকে সম্পর্ক এবং তার সাথে মাঝে মধ্যে যোগাযোগ হয় তার কথা যদি আপনাকে বলা হয় তাহলে কিন্তু খুব সহজেই তাকে মনে করতে পারবেন  এবং তার সম্পর্কে বলতে পারবেন।

আমাদের ব্রেইনে কোন বিষয় যদি বারবার ইনপুট করা হয় সেটি দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে রূপান্তরিত হয়, যার ফলে সে বিষয়টি দীর্ঘদিন মনে রাখতে পারি। তাই কোন পড়া মনে রাখতে হলে কিছুদিন পরপর রিভিশন দিতে হবে। পড়া মনে রাখার উপায় গুলোর মধ্যে রিভিশন খুবই কার্যকারী উপায়।

৫। মনোযোগ সহকারে পড়ুন

বর্তমান সময়ে এমন একটা অবস্থা দাঁড়িয়েছে একপাশে বই থাকে আরেক পাশে মোবাইল। বই পাশে রেখে মোবাইল ব্যবহার করে যার কারণে পড়া মনে রাখা তো অনেক দূরের কথা কি বই পড়ছে সেটাই ভুলে যায়। আপনি যদি ১০ ঘণ্টা বই সামনে নিয়ে বসে থাকেন কিন্তু মনোযোগ সহকারে না পড়েন তাহলে সেই পড়ার কোন মূল্য নেই, মনোযোগ সহকারে ১ ঘন্টা পড়লেই যথেষ্ট। তাই পড়ার  সময় আপনার মোবাইল ফোনটি বন্ধ রাখুন বা দূরে কোথাও রেখে আসুন।

৪। নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুমানো

আমাদের শরীর ভালো রাখার পাশাপাশি ব্রেন ভালো রাখার জন্য ঘুম অনেক প্রয়োজন। এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা পরিপূর্ণ ভাবে ঘুমায় তাদের সৃজনশীলতা অনেক বেশি। আমাদের ব্রেন ঘুমানোর সময় কোন ইনফরমেশন বা তথ্য স্মৃতি হিসেবে রূপান্তর করে। তাই পড়া লেখার পাশাপাশি ঘুমানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন সুস্থ মানুষের রাতে ৬-৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত।

৫। পড়ার জন্য সঠিক সময় নির্ধারণ করা

সারা দিনরাত শুধু বই নিয়ে বসে থাকলে হবে না পড়ার জন্য সঠিক সময় রয়েছে। সে সময় অনুযায়ী পড়লে তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং বিকেলের পরে পড়লে পড়ার প্রতি ভালো ভাবে মনোযোগ দেওয়া যায়। আর গবেষণায় দেখা গিয়েছে বিকেলের পর থেকে আমাদের ব্রেইনর কার্যক্রম অনেকাংশে বৃদ্ধি পায় যা আমাদের পড়া মনে রাখার জন্য সহজ হয়।

৬। বুঝে পড়ুন

শুধু পড়া মুখস্ত করার চেষ্টা করলে হবে না অবশ্যই বুঝে পড়তে হবে। কোনো কিছু পড়ার আগে বোঝার চেষ্টা করুন কি সম্পর্কে বলা হচ্ছে, বুঝে পড়লে দীর্ঘদিন পড়া মনে রাখা যায়।

৭। শব্দ করে পড়ুন

অনেকের আছে মনে মনে পড়ার অভ্যাস রয়েছে, মনে মনে পড়ার থেকে জোরে পড়লে তাড়াতাড়ি পড়া মুখস্ত করা যায়। এর কারণ হচ্ছে জোরে পড়ার কারণে আমাদের কান দিয়ে পড়াটা ব্রেনে খুব সহজে প্রবেশ করতে পারে। পড়া মনে রাখার উপায় গুলোর মধ্যে জোরে পড়া খুব কার্যকরী পয়েন্ট।

৮। শেষ কথা

আজকে পড়া মনে রাখার উপায় সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি আশাকরি পড়া মনে রাখার উপায় সম্পর্কে আপনার অনেক কিছুই জানতে পেরেছেন। আমার এই পড়া মনে রাখার উপায় সম্পর্কে আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে পড়া মনে রাখার উপায় আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিন

Follow topics bangla facebook page

আরো পড়ুনঃ

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ২০২৪

বিকাশে স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

Topicsbangla

জানা ও অজানা বিষয় গুলো আপনাদের কাছে তুলে ধরা আমাদের মূল লক্ষ।আমাদের সাথেই থাকুন আশা করি উপকৃত হবেন।☺☺

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button