2 লক্ষ টাকার মধ্যে সেরা মোটরবাইক কোনটি?
হ্যালো বন্ধুরা আস্লামালাইকুম সবাই কেমন আছেন আশা করি সবাই ভাল আছেন। আপনি যদি কোন বাইক ক্রয় করার কথা ভেবে থাকেন কিন্তু বুঝে উঠতে পারছেন না কোন বাইকটি ক্রয় করলে ভালো হবে তাদের জন্য আজকের পোস্ট অনেক উপকারী হবে।
২ লক্ষ টাকার মধ্যে বাজারে অনেকগুলো ব্র্যান্ডের বাইক রয়েছে যার কারণে ভালো বাইকটি বেছে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আজকের পোস্টে আমি সকল বাইকের গভীরভাবে বিস্তারিত আলোচনা করব এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করবো যার কারণে আপনার বাইক ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে।
প্রতিটি ব্যক্তি আলাদা এবং তাদের পছন্দ ও চাহিদা গুলো আলাদা। প্রতিটি বাইক সবদিক থেকে পারফেক্ট হয় না, তাই আপনার কি প্রয়োজন সেটি আগে বের করুন তারপর সে প্রয়োজন অনুযায়ী ভাই ক্রয় করুন। তাছাড়া অন্যের কথা শুনে বাইক ক্রয় করলে পরিপূর্ণ সার্ভিস পাবেন না। আমি আজকে যে বাইকগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব সেগুলোর ভালো বৈশিষ্ট্য এবং খারাপ দিক গুলো তুলে ধরবো যা থেকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী মিলিয়ে বাইক ক্রয় করতে পারবেন।
বাইকের সম্পূর্ণ বৈশিষ্ট্য google এ সার্চ করার মাধ্যমে পেয়ে যাবেন। আমি শুধু মাত্র সত্যিকারের অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরবো। আমি যে বাইকগুলোর রিভিউ দিব সেগুলোর রাইডার থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা গুলো নিয়ে আমি এই পোস্ট লিখছি। যাতে করে আপনারা সত্যি কারের ভালো এবং মন্দ দিকগুলো সম্পর্কে জানতে পারেন।
আরেকটি কথা টপিক্স বাংলা সব সময় পাঠকদের স্বার্থের কথা ভাবে এর পিছনে টপিক্স বাংলার কখনো স্বার্থ থাকে না। আর এটি কোন পেইড রিভিউ না।
এক পলকে সম্পুর্ন পোস্ট
১। Tvs Apache 4v
২ লক্ষ টাকার বাজেটের মধ্যে প্রথম অবস্থায় রেখেছি Tvs কোম্পানির Apache 4v বাইকটি। কারন আমার কাছে মনে হয় এই বাজেটের মধ্যে অন্য কোন বাইক এত ভালো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। এই বাইকের যেমন সুন্দর লুকিং তেমনি তার পাওয়ারফুল ইঞ্জিন। যা আপনার বাইক রাইডিং এর এক্সপেরিয়েন্স সুন্দর করে তুলবে্।
বাংলাদেশে কিছু মানুষ বলেন এই মডেলের বাইকটি নাকি ভালো না এটি নাকি অতিরিক্ত এক্সিডেন্টের শিকার হয়। আসলে কোন ভাই সেভাবে বানানো হয় না যেটি এক্সিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একটি বাইক কোম্পানি কোন বাইক বানানোর আগে সেটি অনেক ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারপরেই বাজারজাত করেন।
যেহেতু এই বাইকটি অধিক পাওয়ারফুল একটি বাইক সে ক্ষেত্রে কম বয়সের যারা যুবক আছেন তারা এই বাইকটি ক্রয় করেন এবং রাইড করেন। তারা ওভার স্পিডে বাইক চালানোর কারণে দুর্ঘটনা ঘটায়। ওভার স্পিডে বাইক রাইড করলে যেকোনো বাইকই দুর্ঘটনার শিকার হবে। তাই একটি গাড়ির মডেল কে দোষারোপ করার কোন প্রয়োজন নেই।
ভালো দিক
আপনি যদি দুই লক্ষ টাকার মধ্যে একটি পাওয়ারফুল বাইক চান তাহলে এই বাইকটি হবে আপনার জন্য সেরা চয়েস। ২ লক্ষ টাকার মধ্যে এমন কোন বাইক এখন পর্যন্ত নেই যেটা এই মডেলের থেকে বেশি পাওয়ারফুল। এই বাইকটি ইঞ্জিন হচ্ছে অয়েল কুলিং, সহজে ইঞ্জিন গরম হয় না। বর্তমান জেনারেশনের দিকে খেয়াল রেখে এ বাইকের লুকিং করেছে অসাধারণ যা যেকোন যুবককে আকৃষ্ট করবে। এই বাইকটির বিল্ড কোয়ালিটি অনেক ভালো যার ফলে বাইকটির দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে পারবেন।
খারাপ দিক
প্রতিটি বাইকের যেমন ভালো দিক রয়েছে তেমনি খারাপ দিক ও রয়েছে। এই মডেলের বাইকটির তেমন খারাপ দিক নেই তারপরও কিছু খারাপ দিক লক্ষ্য করেছি যা ব্যবহারকারীদের হতাশ করবে।
বাইকটির প্রথমত খারাপ দিক যদি বলতে হয় তাহলে এর মাইলেজ এর বিষয় বলা যেতে পারে। এই বাইকটিতে আপনি সর্বোচ্চ মাইলেজ পাবেন ৩৫ থেকে ৪০। যারা আরো বেশি স্পিডে বাইক রাইড করেন তারা আরো কম মাইলেজ পেতে পারেন। যারা তেলের দিক থেকে সাশ্রই করতে চান তারা এই বাইক থেকে দূরে থাকুন।
বাইকটি যেহেতু অয়েল কুলিং সেক্ষেত্রে মবিল পরিবর্তন করার সঙ্গে অয়েল কুলিং পরিবর্তন করতে হয় এতে বাড়তি খরচ হয়।
বাইকটির যে পরিমাণের পাওয়ারফুল ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে সেই পরিমাণে কন্ট্রোলিং এর ব্যবস্থা করা হয়নি। আমি বলছি না বাইকটির কন্ট্রোলিং একদমই খারাপ তারপরও এর পাওয়ারের দিক বিবেচনা করে আরো ভালো কন্ট্রোলিং করা যেত এবং পিছনের চাকা আরেকটু মোটা করলে ভালো ব্যালেন্স পাওয়া যেত।
সবদিক থেকে বিবেচনা করলে বাইকটির মেইনটেন্ট খরচ অনেক বেশি যা সবার পক্ষে বহন করা সম্ভব হয় না। আপনার যদি বাইকের পিছনে বেশি টাকা খরচ করার ইচ্ছা না থাকে তাহলে এই বাইকটি ক্রয় করার কোন প্রয়োজন নেই। অন্যথায় আপনি যদি একটি পাওয়ারফুল বাইক চান এবং অনেক দূরের ট্যুর বা ঘুরতে চান তাহলে কম বাজেটের মধ্যে এই বাইকটি হবে আপনার জন্য সেরা চয়েস।
২। Suzuki gixxer
Suzuki gixxer বাইকটি প্রস্তুতকারী দেশ হচ্ছে জাপান। জাপানের সব পণ্য কোন কত মান দিক থেকে এগিয়ে। বাইকের ক্ষেত্রেও এটি ব্যতিক্রম নয়। তাই এর মান নিয়ে কোন চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। কয়েক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশের মধ্যে এই কোম্পানিটি অনেক জনপ্রিয় লাভ করেছে। তাদের বিক্রিত বাইকের মধ্যে suzki gixxer এর মডেলটি অন্যতম। এই বাইকটির মধ্যেও ভালো এবং খারাপ দিক রয়েছে তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক এর ভালো ও খারাপ দিকগুলো কি।
ভালো দিক
ভালো দিক যদি বলতে চায় তাহলে প্রথমে বলতে হবে এর লুক এবং ডিজাইন। এর লুক এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যা যেকোনো যুবকের কাছেই ভালো লাগবে। এই বাইকটির কন্ট্রোলিং অনেক ভালো,। বাইকটা হালকা হওয়ার কারণে কন্ট্রোলিং করতে আরো সহজ হয়ে যায়। বাইকটিতে যুক্ত করা আছে পাওয়ারফুল 150cc ইঞ্জিন। বাইকটিতে রাইড করে দারুণ এক্সপেরিয়েন্স উপভোগ করা যায়।
খারাপ দিক
এই বাইকের বেশ কয়েকজন ব্যবহারকারীর সাথে আমার কথা হয়েছে তাদের কথা অনুযায়ী এই বাইকটি ক্রয় করার পরে বেশ কয়েক বছর খুব ভালো পারফরম্যান্স দেয়। তারপর আস্তে আস্তে পারফরম্যান্স কমতে থাকে, অর্থাৎ আগের মতন বাইকের পাওয়ার পাওয়া যায় না। আপনি হয়তো ভাবতে পারেন ব্যবহার করার কারণে একটু পারফরমেন্স অবনতি হওয়াটা স্বাভাবিক, কিন্তু তা নয় এই গাড়িটির পারফরম্যান্স কমে যাওয়ার পাশাপাশি আরো নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
আর এই বাইকটি যদি আপনি ব্যবহার করে বিক্রি করতে চান তাহলে তেমন দাম পাওয়া যায় না। অনেক কম দামে বিক্রি করতে হয় যার ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। প্রথম দিকে এ ব্র্যান্ড টি বাংলাদেশের মানুষের কাছে সেই ভাবে আস্থা অর্জন করতে পারেনি, কিন্তু আস্তে আস্তে এই ব্রান্ড টি তাদের ভালো সার্ভিসের দ্বারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে আস্থা তৈরি করে নিচ্ছে।
এই ছোটখাটো সমস্যা গুলো যদি আপনার কাছে তেমন কোন সমস্যা না হয়ে থাকে তাহলে আপনার জন্য হবে এই বাইকটি সেরা চয়েস। তাই দেরি না করে বাইকটি ক্রয় করে ফেলুন এবং এর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপভোগ করুন।
২। Pulser 150cc
বাংলাদেশে এমন কোন ব্যক্তি নেই যে এই বাইকটির সম্পর্কে জানে না বা এই বাইকটি কখনো দেখেনি। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এই বাইকটির বিপুল পরিমাণের জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন।২০০৯-১০ সালের কথা যদি বলতে হয় তাহলে সেই সময় ভালো মানের বাইক বলতে বাঙালি pulser 150cc কেই বুঝতো। কালের পরিবর্তনে আরো অন্য ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এবং সেগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যাইহোক আমরা pulser 150cc বাইকটি নিয়ে কথা বলছিলাম। এটি bajaj কোম্পানির একটি বাইক আর এর প্রস্তুতকারী দেশ হচ্ছে ভারত। চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক এই বাইকটির ভালো দিকগুলোর সম্পর্কে।
ভালো দিক
ভালো দিকগুলো যদি বলতে হয় আপনি যদি একটি ফ্যামিলি বাইক কিনতে চান যেটি আপনার ফ্যামিলি অন্য মেম্বাররা রাইট করবে তাহলে আমার মতে পালসার হবে আপনার best choice। পালসার এমন একটি বাইকের যা সবার সঙ্গে মানানসই যুবক বা বয়স্ক লোক হোক। গাড়িটি সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে এর টেকসই কারণ এই গাড়িটি আপনি অনায়াসে অনেক বছর যাবত ব্যবহার করতে পারবেন কোন ধরনের বড় সমস্যা ছাড়াই। গাড়িটিতে অনেক ভালো মাইলেজ পাওয়া যায় গাড়িটিতে আপনি সর্বোচ্চ মাইলেজ পাবেন ৫০ কিলোমিটার।
খারাপ দিক
এই গাড়িটির যদি খারাপ দিক বলতে চাই তাহলে এর ডিজাইন আরও আপডেট করা উচিত কারণ বিগত বছরগুলো মতনই পালসার তাদের ডিজাইন একই রেখেছে কোন পরিবর্তন আনেনি। এবং এই গাড়িটি যে মিটার ব্যবহার করে হয়েছে সেটি অনেক আগেকার বর্তমানে এত টাকা খরচ করে একটি বাইক কেনার পর এমন মিটার কখনো কেউ আশা করে না তাই আমি বলব পালসার কোম্পানির এই দিকগুলো খেয়াল রাখা উচিত তাদের ডিজাইন এবং মিটার এগুলো যদি আপডেট করতে পারে আবার বাংলাদেশের মধ্যে pulsar ভালো মার্কেট পাবে আশা করা যায়।
শেষ কথা
আমি বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে এবং বাংলাদেশের মার্কেট অনুযায়ী গবেষণা করে আমার কাছে মনে হয়েছে এই তিনটি বাইক হচ্ছে 2 লক্ষ টাকার মধ্যে বা তার আশেপাশে বাজেটের মধ্যে সেরা বাইক। এখন আপনার কাছে অন্য কোন ব্র্যান্ডের বাইক ভালো লাগতে পারে সেটি আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাই নিজের শখের বাইক ক্রয় করার পূর্বে যাচাই-বাছাই করে এবং নিজের পছন্দ অনুযায়ী ক্রয় করবেন তাহলেই সন্তুষ্ট থাকতে পারবেন।
Follow topics bangla facebook page
আরো পড়ুনঃ
ডিলিট করা ফেসবুক পোস্ট কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় আসুন জেনে নেই
বিকাশে স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
ঘরে বসে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করুন
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করুন।