Android Tips

স্মার্টফোনের ক্ষতিকর দিকগুলো কি কি?

স্মার্টফোনের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আজকে আলোচনা করবো। প্রযুক্তি উন্নয়নের ফলে এখন আমাদের সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন। বিজ্ঞানীরা প্রথমে মোবাইল আবিষ্কার করেছিল শুধুমাত্র কথা বলার জন্য কিন্তু প্রযুক্তি উন্নয়নের কারনে মোবাইল দ্বারা শুধু কথা বলা নয় ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গেমিং, ভিডিও দেখা এমন আরো নানা ধরনের কাজ করতে পারছি যার কারণে স্মার্টফোন ব্যবহার করা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

স্মার্টফোনের ক্ষতিকর দিক

স্মার্টফোনের যেমন ভালো দিক রয়েছে তার সাথে স্মার্টফোনের ক্ষতিকর দিক রয়েছে।আজকে সেই ক্ষতিকর দিক গুলো নিয়ে কথা বলবো।সত্যি কথা  বলতে স্মার্টফোন যেমন আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে তার সাথে অনেক সমস্যা তৈরি করেছে যেই সমস্যা গুলো আমরা মনের অজান্তে এরিয়ে যাচ্ছি। তাই আজকে পোস্ট লেখার কারনটাই হলো আপনাদেরকে সচেতন করা।  তাহলে চলুন শুরু করা যাক

১।আসক্তি

দিন যত যাচ্ছে আমারা স্মার্টফোনের প্রতি তত আসক্তি হয়ে পড়ছি। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অন্য বাকি কাজ গুলো বাদ দিয়েও স্মার্টফোন ব্যবহারে ৫-৬ ঘন্টা ব্যয় করছি।তাহলে একবার চিন্তা করে দেখুন আমারা সারাদিনে কত মূল্যবান সময় ব্যয় করছি মেবাইল ব্যবহার করার পিছনে।

২। শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া

মোবাইলে অতিরিক্ত কথা বলা হলে আমাদের কানে সমস্যা হওয়ার সম্ভবনা থাকে।  আর যাদের দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলার প্রয়োজন হয়  তাদের  কানে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।আর বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে জানতে পারছে যে আমার যখন মোবাইল রিসিভ করি তখন ডান কানে রিসিভ করলে আমাদের শরীরে অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এর কারণ হচ্ছে মোবাইলে কল আসার মুহূর্তে রেডিয়েশন এর মাত্রা বেশি থাকে তাই চেষ্টা করুন মোবাইল বাম কানে রিসিভ করার এবং দীর্ঘ সময় কথা বলতে হেডফোন ব্যবহার করুন।

৩। রাতে ঘুম কম হওয়া

যাদের মাঝে রাত জেগে মোবাইল ব্যবহার করার অভ্যাস রয়েছে তাদের রাতে ঘুমাতে অসুবিধা হয়। এর কারণ হচ্ছে মোবাইলে যেই আলোক রশ্মি  রয়েছে সেটির কারনে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। রাতে ঘুমানোর জন্য আমাদের শরীর থেকে মেলাটোনিন হরমোন নিশরন হতে হয় কিন্তু স্মার্টফোনের নীল আলো আমাদের শরীরের মেলাটোনিন হরমোন উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায়। আমাদের শরীর ভালো রাখার জন্য ঘুম খুবই প্রয়োজন। ৭-৮ ঘন্টা কম ঘুম হলে আমাদের শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৪। চোখের সমস্যা

স্মার্ট ফোন বেশি ব্যবহার করার ফলে চোখের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর কারণ হচ্ছে আমরা যখন স্মার্টফোন ব্যবহার করি তখন ডিসপ্লে থেকে যে আলো বের হয় সেটা আমাদের চোখের জন্য ক্ষতিকর। নীল আলো চোখের রেটিনার জন্য ক্ষতিকর। বেশি সময় ধরে স্মার্টফোন ব্যবহার করার কারণে আমাদের চোখের রেটিনার মারাত্মক সমস্যা হয়ে যেতে পারে। যেটি ডাক্তারি ভাষায় ম্যাককুলার ডিজেনারেশন বলা হয়। আবার সারা জীবনের জন্য অন্ধত্ব হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

৫। রেডিয়েশন

স্মার্টফোনের ক্ষতিকর দিক গুলোর মধ্যে রেডিয়েশন মারাত্মক ক্ষতিকর । বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা গেছে স্মার্টফোন বা অন্যান্য ওয়ারলেস ডিভাইস তৈরি হয় লো- ফ্রিকুয়েন্সির মাইক্রোওয়েভ রেডিয়েশন বা বিকিরণ। এই রেডিয়েশন নিয়ে বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ সময় ধরে গবেষণা করে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞানীরা বলেন, রেডিয়েশন মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর এবং রেডিয়েশনের মাধ্যমে মানবদেহে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।  রেডিয়েশনের ফলে আমাদের মস্তিষ্কে ক্যান্সার হওয়ার মতন সম্ভাবনা রয়েছে। মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন শুক্রাণুর ঘনত্ব কমিয়ে দেয়।

মোবাইলে যখন ব্যাটারি চার্জ কম থাকবে তখন চেষ্টা করুন মোবাইল না ব্যবহার না করাটাই ভালো এর কারণ ব্যাটারি চার্জ কম থাকা অবস্থায় মোবাইলের রেডিয়েশন অনেক গুণ মাত্রায় বেড়ে যায়। মোবাইল চালু থাকা অবস্থায় এর থেকে রেডিয়েশন আমাদের মানবদেহে প্রবেশ করে তাই মোবাইল ব্যবহার করার পর দূরে রাখার চেষ্টা করুন।  আমাদের মাঝে প্রায় মানুষ ঘুমানোর সময় মোবাইল পাশে রেখে বা বালিশের নিচে রেখে ঘুমিয়ে যায় এটি একদম ঠিক না ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোনটি বন্ধ রাখুন অথবা ৩ থেকে ৪ ফিট দূরে রাখুন।

৬।মানসিক চাপে থাকা

অতিরক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার করার জন্য বাসায় থাকতে ইচ্ছে হয়। বাইরে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া বা ঘুড়াঘুড়ি করা হয়না যার ফলে সবার থেকে সামাজিক দূরত্ব বৃদ্ধি পায় এর ফলে বেশিরভাগ সময়ই  মন খারাপ থাকে এবং আপনার গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো ব্যাঘাত ঘটে। স্মার্টফোন  বেশি ব্যবহার করার কারণে আমাদের একা থাকা প্রয়োজন হয় যার ফলে সবার থেকে অনেক দূরত্ব বাড়িয়ে  দেয়। তাই স্মার্ট ফোন বেশি ব্যবহার করলে মানসিক চাপ বেড়ে যায়

৭।শেষ কথা

স্মার্টফোনের ক্ষতিকর দিক গুলো নিয়ে যত সম্ভব চেষ্টা করেছি আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। স্মার্টফোন আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। আর প্রতিটা জিনিসের ভাল এবং মন্দ দিক থাকা স্বাভাবিক। তাই ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে আমরা ভালো ভাবে জানবো এবং সচেতন থাকার চেষ্টা করব। আশা করি স্মার্টফোনের ক্ষতিকর দিক গুলো নিয়ে আজকের এই লেখাটি সবার কাছে ভালো লাগবে। সবাইকে ধন্যবাদ এত সময় নিয়ে আমার পোস্ট  টি পড়ার জন্য।

Follow topics bangla facebook page

আরো পড়ুনঃ

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার উপায়। 2021

মন ভালো করার উপায়।2021

এন্ড্রয়েড মোবাইল পানিতে পড়লে করণীয়

Topicsbangla

জানা ও অজানা বিষয় গুলো আপনাদের কাছে তুলে ধরা আমাদের মূল লক্ষ।আমাদের সাথেই থাকুন আশা করি উপকৃত হবেন।☺☺

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button