ল্যাপটপ ভালো নাকি কম্পিউটার ভালো?
ল্যাপটপ ভালো নাকি কম্পিউটার ভালো এ প্রশ্নটি আমাদের মাথায় তখনই ঘুরপাক খায় যখন আমরা সিদ্ধান্ত নেই একটি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ক্রয় করার। আসলে ল্যাপটপ এবং কম্পিউটার দুইটাই ভালো এটা নির্ভর করে ব্যবহারকারীর প্রয়োজন এর উপরে। তাই আপনাদের সুবিধার জন্য আমি আজকে ল্যাপটপ এবং কম্পিউটারের ভালো ও খারাপ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করব যার ফলে আপনারা খুব সহজে আপনাদের প্রয়োজনের অনুযায়ী ক্রয় করতে সুবিধা হবে।
তাহলে ল্যাপটপ ভালো নাকি কম্পিউটার ভালো এটা নিয়ে পোস্টটি শুরু করা যাক আমরা প্রথমে কম্পিউটারের ভালো এবং মন্দ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করব তারপর ল্যাপটপ ভালো এবং খারাপ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করব আশা করি সবাই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন
এক পলকে সম্পুর্ন পোস্ট
১। কম্পিউটারের ভালো দিকগুলো
কম্পিউটার বলতে আমরা বুঝি ডেক্সটপ আর ডেস্কটপের ভালো আর খারাপ দিকগুলো নিচে দেওয়া হল
১। পারফরম্যান্স
আমরা যদি পারফরম্যান্স দিক থেকে এগিয়ে থাকতে চায় তাহলে আমাদের জন্য কম্পিউটার হবে বেস্ট চয়েস। কারণ কম্পিউটারে খুব কম বাজেটের মধ্যে ভালো পারফর্মেন্স আউটপুট পাওয়ার সম্ভব
২। ভারী কাজ
আমি মনে করি ভারী কাজ করার জন্য ডেস্কটপ অনেক ভালো হবে। যেমন গ্রাফিক্সের এবং ভিডিও এডিটিং এর মত ভারী যে কাজগুলো রয়েছে সেগুলো করার জন্য ডেক্সটপ একদম পারফেক্ট
৩। আপগ্রেড
কম্পিউটারে আপগ্রেড করা অনেক সহজ। কারণ হচ্ছে কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ গুলো খন্ড খন্ড তাই আপনি চাইলেই নিজেই এগুলো আপগ্রেড করতে পারবেন। যেমন এখন আপনার কাছে টাকা স্বল্পতা থাকার কারণে একটু আগের ভার্সন এর প্রসেসর ব্যবহার করছেন যখন আপনার কাছে টাকা হবে তখন আবার আপডেট প্রসেসর আপনার পিসি তে সেটআপ করতে পারবেন।
৪।স্থায়িত্ব
কম্পিউটার দীর্ঘসময় ব্যবহার করার জন্য উপযোগী। এর কারণটা হচ্ছে কম্পিউটারের কিছু নষ্ট হয়ে গেলে সেটি খুব সহজে ঠিক করতে পারবেন এবং সময়ের সাথে সাথে এটি আপডেট করতে পারবেন তাই আপনি একটি কম্পিউটার অনেক বছর ধরে ব্যবহার করতে পারবেন।
৫। গেমিং
আপনি যদি গেম খেলতে খুব ভালোবাসেন তাহলে অবশ্যই আপনার জন্য কম্পিউটার ভালো হবে। কারণ ভালোভাবে গেমিং করার জন্য হাই কনফিগারেশনের পিসি প্রয়োজন হয় এবং তার সাথে অনেক জায়গার প্রয়োজন হয়ে থাকে তাই হার্ডডিক্স স্পেস অনেক লাগে আর এই সুবিধাগুলো আপনি কম্পিউটারে ভাল পাবেন।
২। কম্পিউটারের খারাপ দিক গুলো
কম্পিউটারের খারাপ দিক থেকে ভালো দিকগুলোই বেশি তারপরও এর খারাপ দিকগুলো হল।
১। বহন
যেহেতু কম্পিউটার একটি সিপিউ সাথে মনিটর থাকে আলাদা আলাদা ভাবে। তাই এটা বহন করা খুব অসুবিধা আপনি ইচ্ছা করলে যেখানে সেখানে এটি নিয়ে যেতে পারবেন না।
২। আরাম করে কাজ করা যায় না
কম্পিউটার যেহেতু আকারে বড় তাই এটি কাজ করার জন্য সবসময় বসে কাজ করতে হবে। আপনি চাইলে এটি কে বিছানায় নিয়ে শুয়ে কাজ করতে পারবেন না।
৩।বিদ্যুৎ না থাকলে কাজ করতে পারবেন না
কম্পিউটারের বিদ্যুৎ না থাকলে কাজ করা সম্ভব না কারন কম্পিউটারে কোন ব্যাটারি সুবিধা থাকে না তাই এটি বিদ্যুৎ চলে গেলে আর ব্যবহার করতে পারবেন না।তাই যাদের এলাকায় খুব বেশি বিদুৎ যায় তাহলে কম্পিউটার নিয়ে অনেক ভোগান্তির মাঝে পড়তে হবে
৩। ল্যাপটপের ভালো দিক গুলো
বর্তমান সময়ে ল্যাপটপের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে এর কারন হচ্ছে ল্যাপটপের দাম তুলনামূলক ভাবে অনেক কমে গেছে যা ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে এসেছে।
আপনাদের কাছে ল্যাপটপের কিছু ভালো দিক গুলো নিয়ে আলোচনা করবো
১।ডিজাইন
ল্যাপটপের নিয়া যদি কথা বলতে চায় তাহলে সর্বপ্রথম ল্যাপটপের ডিজাইন নিয়ে কথা বলা উচিত। এর কারন হচ্ছে এর ডিজাইন এতো সুন্দর যার ফলে যে কারো খুবই সহজে পছন্দ হবে আর ল্যাপটপ আকারে একটু ছোট হওয়ার কারনে এটি দেখতে আরো বেশি আকর্ষণীয় লাগে
২।বহন
আপনি যদি একটু ভ্রমণ পিপাসু আছেন একটু ঘুরতে ভালোবাসেন তার সাথে আপনার ব্যাক্তিগত কাজ গুলো সেরে ফেলতে চান আবার অনেকেই আছেন এক জায়গা বেশি ক্ষন থাকতে পারেন না কখনো বসে কাজ করতে হয় আবার কখনো শুয়ে কাজ করতে ইচ্ছা হয় তাদের জন্য আমি মনে করি ল্যাপটপ একদম পারফেক্ট হবে কারন ল্যাপটপ আকারে অনেক ছোট হয় যার ফলে এটি খুব সহজে বহন করতে পারবেন।আবার যারা অফিসে কাজ করে আবার বাসায় এসে কাজ করার প্রয়োজন পরে তাদের জন্য ল্যাপটপ বেস্ট
এটি যেখানে সেখানে নিয়ে আপনার কাজ গুলো করতে পারবেন তাই আমি মনে করি ল্যাপটপ তাদের জন্য বেস্ট চয়েস যারা এক জায়গাই বসে বেশিক্ষন কাজ করতে মন চায় না।
৪।বিদ্যুৎ বিহীন ব্যবহার
আমাদের মাঝে অনেকে আছেন যারা গ্রামে থাকি যার ফলে বেশির ভাগ সময় কারেন্ট থাকে না তাদের জন্য ল্যাপটপ ভালো হবে কারন ল্যাপটপ যেহুতু ব্যাটারি দ্বারা চালিত হয় সেহেতু এটি এক টানা ৪-৫ ঘন্টা ব্যাকআপ পাওয়া যায় তাই। আর যার ফলে কারেন্ট না থাকলেও আমরা আমাদের কাজ গুলো করতে পারবো
৪।ল্যাপটপের খারাপ দিক গুলো
ল্যাপটপের যেরকম অনেক গুলো ভালো দিক আছে তার সাথে অনেক খারাপ দিক রয়েছে সেগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করবো
১।তুলনামূলকভাবে দাম বেশি
ল্যাপটপের দাম একটু বেশি হয়ে থাকে। ৫০ হাজার টাকা দিয়ে যদি আমরা একটি ল্যাপটপ কিনি সেই টাকা দিয়ে যদি একটি কম্পিউটার বিল্ড করার চিন্তা করি তাহলে অনেক ভালো মানের কনফিগারেশন পাবো তাই দামের দিক দিয়ে বিবেচনা করলে ল্যাপটপের দাম একটু বেশি
২।হিটিং ইস্যু
ল্যাপটপে অনেক কম কুলিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়ে থাকে যার ফলে হিটিং সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। একটু বেশি সময় ধরে ল্যাপটপ ব্যবহার করা হলে এটি অনেক গরম হয়ে যায় আর এর ফলে ল্যাপটপে হতে পারে অনেক বড় ধরনের সমস্যা বেশি গরম হলে মাদারবোর্ড সমস্যা দেখা দিতে পারে
৩।পারফরম্যান্স
আমরা সবাই জানি ল্যাপটপ ব্যাটারি মাধ্যমে চলে যার ফলে এটি পাওয়ার একটু কম পাই যার কারনে পারফরম্যান্স দিক থেকে এটা ডাউন মারে আর ল্যাপটপ দিয়ে ভারী কাজ গুলো করা একটু কঠিন হয়ে পরে।
৪।স্থায়িত্ব
ল্যাপটপ স্থায়িত্ব একটু কম এর কারন হচ্ছে ল্যাপটপে আমরা বেশি হলে ram আর ssd আপডেট করতে পারবো এর বেশি আপডেট করা সম্ভব হয় না যার ফলে ৪-৫ বছর পর এটি পারফরম্যান্স অনেক ডাউন করে আর ল্যাপটপ নষ্ট হয়ে গেলে ঠিক করতে অনেক টাকার প্রয়োজন হয় তাই স্বায়ীত্ব দিক থেকে ল্যাপটপ একটু পিছিয়ে।
৩।কার জন্য কোনটি প্রয়োজন
যাদের জন্য কম্পিউটারঃভারি কাজ করার জন্য গেমিং করার জন্য কম্পিউটার বেস্ট যারা মূলত কাজের জন্য নিবেন বা বাজেট কম হওয়ার পর মোটামুটি কাজ করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আমি মনে করি কম্পিউটার বেস্ট।
যাদের জন্য ল্যাপটপঃআসলে এখন বাজারে অনেক ভালো মানের ল্যাপটপ রয়েছে আপনি যদি একটু বেশি টাকা খরচ করতে পারেন তাহলে ল্যাপটপ আপনার জন্য পারফেক্ট আবার অনেক জন আছে যাদের বাসায় কাজ করার পাশাপাশি বাইরে কাজ করার প্রয়োজন পরে তাদের জন্য ল্যাপটপ ভালো হবে।
আমাদের মাঝে অনেকে আছে টুকটাক কাজ করতে চায় মুভি দেখা গান শোনা ইন্টারনেট ব্যবহার করা এই কাজ গুলো করতে চাইলে ল্যাপটপ ভালো হবে আর আপনি যদি একটু সৌখিন মানুষ হন তাহলে তো ল্যাপটপ আপনার ফাস্ট চয়েস থাকবে
৪।শেষ কথা
আমরা যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করেছি ল্যাপটপ আর কম্পিউটার মাঝে ভালো ও খারাপ দিক গুলো তুলে ধরার জন্য এখন আপনাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আপনার পছন্দের জিনিসটি নির্বাচন করতে পারেন।
Follow topics bangla facebook page
আরো পড়ুনঃ
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার উপায়। 2021