মোটা হতে চান? মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা দেখে নিন
আজকে আপনাদের সাথে মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করবো। নিজেকে সুন্দর দেখাতে কে না চায় সবাই চায় নিজেকে একটু পারফেক্ট দেখাক। কিন্তু আমাদের মাঝে অনেকেই আছে অতিরিক্ত চিকন হওয়ার কারণে দেখতে একটু খারাপ লাগে। নিজেকে যদি দেখতে ভালো না লাগে তাহলে নিজের মধ্যে কনফিডেন্স অনেকাংশে কমে যায়। যা জীবনে উন্নতির পথে বাধা সৃষ্টি করে। যারা অতিরিক্ত চিকন তাদের জন্য আজকে মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা দেওয়ার চেষ্টা করবো। নিজেকে সুন্দর দেখাতে হলে অতিরিক্ত মোটা হওয়া যাবে না এবং অতিরিক্ত চিকন হওয়া যাবে না। যারা বেশি চিকন একটু মোটা হতে চান তাদের জন্য আজকের পোস্ট খুবই উপকারী হবে। কিছু নিয়ম আছে যেগুলো অনুসরণ করলে খুব সহজে মোটা হতে পারবেন।
আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন প্রচুর পরিমানের খাওয়া-দাওয়া করতে পারেন তারপরও স্বাস্থ্যের কোন উন্নতি হচ্ছে না। আবার অনেকেই আছেন তেমনই খাওয়া-দাওয়া করে না তারপরও অনেক বেশি মোটা। এগুলোর পিছনে অনেকগুলো কারণ থাকে মূলত হরমোন এর কারণে এরকম হয়ে থাকে। আবার অনেকে আজেবাজে খাবার বেশি গ্রহণ করে কিন্তু পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করেন না সেইজন্যে স্বাস্থ্যের কোন উন্নতি ঘটছে না।
তাই যারা বেশি চিকন তাদের জীবন পরিচালনা নিয়ম গুলো একটু পরিবর্তন করলে আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারবেন। চিকন হওয়ার ফলে আমাদের নানা রকম কথার মানুষের মুখ থেকে শুনতে হয়। অনেকে বলেন নেশায় আসক্তি হওয়ার কারণে শরীরের অবস্থা এরকম আরো নানারকম হাসাহাসি করে। এইসব থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য আপনার জীবনের পরিবর্তন আনতে হবে। আজকে আমি মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা দিবো সেগুলো অনুসরণ করলে অবশ্য আপনিও খুব তাড়াতাড়ি মোটা হতে পারবেন।
এক পলকে সম্পুর্ন পোস্ট
মোটা হওয়ার খাবার
মোটা হতে চাইলে অবশ্যই ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। যে খাবার গুলোতে বেশি পরিমাণে পুষ্টিযুক্ত থাকে সে খাবার গুলো বেশি বেশি করে গ্রহণ করতে হবে। এখন আমি কিছু খাবারের নাম বলব যে খাবার গুলোর মধ্যে প্রচুর পরিমানের ক্যালোরি ও পুষ্টি রয়েছে এবং এই খাবারগুলো আপনাকে মোটা হওয়ার জন্য সাহায্য করবে।
ক্যালরিযুক্ত খাবার
আপনি যদি কম খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার খাবার খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। কম খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বাড়ে না এবং যে খাবার গুলোতে বেশি পরিমাণে ক্যালরিযুক্ত থাকে সেই খাবারগুলো বেশি বেশি করে খেতে হবে। যেগুলো খাবারে বেশি ক্যালরি থাকে সে খাবার গুলোর নাম হল।ঘি, মাখন, ডিম, পনির, কোমল পানীয়, গরু-খাসির মাংস, আলু ভাজা, মিষ্টি জাতীয় খাবার, চকলেট, কন্ডেনস্ড মিল্ক, ডিম, কিসমিস, খেজুর, দই, কলা, আঙুরের জুস, আনারস ইত্যাদি এই খাবারগুলোর মাছে প্রচুর পরিমানের ক্যালোরি যুক্ত রয়েছে। চেষ্টা করুন এই খাবারগুলো বেশি বেশি করে খাওয়ার এবং প্রতি বেলায় এই এই ধরনের খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
কার্বোহাইড্রেট খাবার গ্রহণ করুন
কার্বোহাইড্রেট খাবার গুলো আপনার শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা কার্বোহাইড্রেট খাবার এড়িয়ে চলবেন। আর যাদের ডায়াবেটিস এর কোন সমস্যা নেই আপনার ওজন বাড়াতে চাচ্ছেন তারা কার্বোহাইড্রেট খাবার বেশি বেশি খাওয়ার চেষ্টা করুন। মিষ্টি জাতীয় খাবার গুলোতে বেশি পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। যেমনঃ তরমুজ, চিনি, গম, আনারস, গম থাক, ভূট্টা থাক, কুমড়া, আলু ফ্রাই, থেকে রুটি অন্তর্ভুক্ত বেকড আলু, পাকা কলা, মধু, ইত্যাদি এই খাবারগুলোর মাছে প্রচুর পরিমানের কার্বোহাইড্রেট যুক্ত রয়েছে। আপনার ওজন যদি খুব দ্রুত বাড়াতে চান তাহলে এই খাবারগুলো প্রতিদিন গ্রহণ করার চেষ্টা করুন।
প্রোটিন যুক্ত খাবার গ্রহণ করুন
চিকন থেকে যদি মোটা হতে চান তাহলে অবশ্যই মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা এর মধ্যে প্রোটিন যুক্ত খাবার রাখতে হবে। প্রোটিনযুক্ত খাবার গুলোতে প্রচুর পরিমানের চর্বি থাকে যা গ্রহণ করলে খুব তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যাবে। এই খাবারগুলোর মধ্যে বেশি পরিমাণে প্রোটিন থাকে সেই খাবারগুলো নাম হচ্ছে। যেমনঃ ডিম, মুরগীর স্তন, বাদাম, কুটির পনির, গ্রিক দই, দুধ, চর্বিযুক্ত গরুর মাংস, মাছ, চিনাবাদাম ইত্যাদি এগুলো হচ্ছে হাই প্রোটিন যুক্ত খাবার। চেষ্টা করুন প্রতিদিন এই খাবারগুলো গ্রহণ করার।
মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা
মোটা হতে চাইলে আপনার খাদ্য তালিকার মধ্যে অবশ্যই পরিবর্তন আনতে হবে। পুষ্টিকর খাবার বেশি গ্রহণ করতে হবে এমন নিয়ম অনুসারে খাবার গ্রহণ করলে কিছুদিনের মধ্যে আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি চোখে পড়বে। আপনাদেরকে দৈনিক ফলো করার মতন মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা এর রুটিন দিব যেটা অনুসরণ করলে কিছু দিনের মধ্যে আপনার শরীরের পার্থক্য খুঁজে পাবেন।
মোটা হওয়ার জন্য সকালের নাস্তা
সকাল বেলার নাস্তা তালিকায় আপনি এই খাবারগুলো রাখবেন
কাঁচা ছোলা
কাঁচা ছোলার মাঝে কিন্তু অনেক পরিমাণে প্রোটিন যুক্ত রয়েছে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কাঁচা ছোলা খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের মাঝে অন্যরকম এনার্জি অনুভব করতে পারবেন।
কিসমিস ও কাঠবাদাম
কিসমিস ও বাদাম হলো কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার। এই খাবারগুলো খেলে খুব সহজে ওজন বেড়ে যায়। টাইম মোটা হওয়ার জন্য কিসমিস ও বাদাম সকাল বেলার নাস্তা হিসেবে খেতে পারেন। কিসমিস ও কাঠবাদাম সারারাত ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে গ্রহণ করুন। এভাবে 6 মাস হওয়ার চেষ্টা করুন তাহলে আপনার শরীরের পার্থক্য আপনি নিজেই খুঁজে পাবে। আপনার শরীরের মাঝে সৌন্দর্য ফুটে উঠবে এবং শক্তিশালী হয়ে উঠবেন।
ডিম
মোটা হওয়ার জন্য সকালের নাস্তা হিসেবে ডিম কিন্তু খুবই উপকারী। কারণ ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি ও প্রোটিন। ডিমের কুসুমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণের ফ্যাট যা আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।
ফলমূল
সকালে নাস্তা হিসাবে ফলমূল খেতে পারেন কারণ ফলমূলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। কলা, আপেল, আঙ্গুর,, কমলা, এই ফলগুলো সকাল বেলা খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
মোটা হওয়ার জন্য দুপুরের খাবার
আপনি যদি খুব তাড়াতাড়ি মোটা হতে চান তাহলে দুপুরের খাবার দিকে একটু বেশি খেয়াল রাখতে হবে। যাতে করে দুপুরের খাবার গুলোতে প্রোটিন ও ক্যালরির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে।
ভাত
আমরা যারা বাঙালি আছে তারা তো সব সময় দুপুরে ভাত খেয়ে থাকি। ভারতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট। এবং ভাত একটি শর্করা জাতীয় খাবার আর শর্করা জাতীয় খাবার ওজন বাড়ানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই দুপুর বেলা বেশি পরিমাণে ভাত খাওয়ার চেষ্টা করুন। স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি খাওয়ার চেষ্টা করবেন প্রতিদিন।
মাছ বা মাংস
দুপুরের খাবারে ভাতের সাথে অবশ্যই মাছ ও মাংস রাখার চেষ্টা করবেন। যেকোনো মাংস বা যে কোন মাছ দুপুরবেলা ভাতের সাথে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ মাছ ও মাংসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ক্যালরির
শাকসবজি
দুপুরে খাবারের তালিকায় অবশ্য শাকসবজিও রাখতে হবে। শুধু প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করলে আমাদের শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। অতিরিক্ত কোন কিছু ভালো না তাই শুধু বেশি বেশি প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করলে শরীরের জন্য তা একদমই ভালো হবে না। প্রোটিন জাতীয় খাবারের সাথে অবশ্য শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
মোটা হওয়ার বিকালের নাস্তা
আপনি যদি মোটা হতে চান তাহলে চেষ্টা করুন একটু পর পর খাওয়ার। কখনো ক্ষুধা অবস্থায় থাকবেন না যখনই খিদে লাগবে তখনই খাবার গ্রহণ করুন। অল্প করে হোক একটু পরপর খাওয়ার চেষ্টা করেন। বিকেলে মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা এর মধ্যে যে খাবারগুলো রাখবেন
পাউরুটি বা কেক
বিকালের নাস্তা হিসেবে পাউরুটি বা কেক খেতে পারে। কারণ পাউরুটির ময়দা দিয়ে তৈরি করা হয় আর ময়দা হলো শর্করা জাতীয় খাবার। তাই এটি শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
বার্গার
বিকাল বেলা বা সন্ধ্যেবেলা নাস্তা হিসেবে বার্গার খেতে পারেন। বার্গার খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
চিকেন ফ্রাই ও কাবাব
বিকেলের নাস্তা হিসেবে চিকেন ফ্রাই বা কাবাব কিন্তু খুবই পারফেক্ট খাবার। এই খাবারগুলো মাঝে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ক্যালরির। তাই বিকেল বেলা নাস্তা হিসেবে চিকেন ফ্রাই বা গরুর মাংসের কাবাব খেতে পারেন। বাসায় খাবার গুলো তৈরি করার চেষ্টা করুন। কারণ বাইরের খাবার গুলোর মধ্যে বেশি ভেজাল থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
ফাস্টফুড
বিকেলের নাস্তা হিসেবে ফাস্টফুড খাবার গুলো হওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ এই খাবার গুলোতে বেশি পরিমাণে তেল থাকে যা শরীরের চর্বি বাড়াতে সাহায্য করে।
মোটা হওয়ার রাতের খাবার
রাতের মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা হচ্ছে
ভাত
আমরা যারা বাঙালি তারা তিন বেলা ভাত খেয়ে অভ্যস্ত। কিন্তু রাতে ভারী খাবার খাওয়া ঠিক না তাই চেষ্টা করুন অল্প ভাত খাওয়ার এবং বেশি পরিমাণ এর শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করবো
মাছ ও মাংস
রাতের বেলাও মাছ ও মাংস খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন। কারণ মোটা হতে আমাদের শরীরের প্রয়োজন প্রচুর পরিমানের ক্যালোরি ও প্রোটিন। যা যোগান দিতে আমাদের মাছ ও মাংস বেশি করে খেতে হবে।
রুটি
যারা রাতে ভাত খেয়ে অভ্যস্ত না। তারা রুটি খেতে পারেন কিন্তু খেয়াল রাখবেন বেশি পরিমাণে রুটি খাওয়া যাবে না। রুটির সাথে গরু মুরগি বা খাসির মাংস খেতে পারেন। অথবা রুটির সাথে সবজি খেতে পারেন।
শেষ কথা
আজকে আমি যে টিপস গুলো শেয়ার করেছি সেগুলো অনুসরণ করলে কয়েক দিনের মধ্যে আপনার মাঝে পার্থক্য খুঁজে পাবেন। আর আমি বেশি প্রোটিন ও চর্বি জাতীয় খাবার এর কথা বলেছি এই খাবারগুলো বেশি গ্রহণ করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই পরামর্শ থাকবে প্রতিদিন বেশি পরিমাণ পানি পান করবেন।
আজকে মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি আশাকরি আপনাদের সবার কাছে ভালো লেগেছে
Follow topics bangla facebook page
আরো পড়ুনঃ
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ২০২৪
বিকাশে স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম