ফ্রান্সে অভিবাসী বৈধকরণের উপায়
ফ্রান্সে অভিবাসী বৈধকরণ বর্তমানে ফ্রান্সের একটি অন্যতম বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে । বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ ফ্রান্সে যায় নিজেদের জীবিকার তাগিদে ও ফ্রান্সে পড়াশুনা করার জন্য। ফ্রান্সে যেয়ে নানা ভাবে নিজেরা নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলে তারা তখন আর ফ্রান্সে বৈধ ভাবে থাকতে পারবে না। তখন তাদের ফ্রান্স ছেড়ে চলে আসতে হবে অথবা ফ্রান্সে অবৈধ ভাবে থাকতে হবে ।এসব অবৈধ অভিবাসী দের বৈধ করার জন্য বর্তমানে ফ্রান্সের সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই প্রজ্ঞাপনটি বেশ কয়েকবার জারি করতে চাওয়া সত্ত্বেও কিছু কারণ বসত এটি জারি করা হয়নি সেই সময়ে। অবশেষে গত ২৮ নভেম্বর মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস বহু আকাঙ্খিত এ প্রজ্ঞাপনটি উপস্থাপন করেন। এ প্রজ্ঞাপনের ফলে মন্ত্রিসভা অবৈধ ভাবে ফ্রান্সে বসবাসকারীদের বিধিসম্মতভাবে বৈধ করার প্রক্রিয়া চালুর বিষয়ে একমত হন। আজকের ব্লগে আমরা ফ্রান্সে অভিবাসীদের বৈধকরণ এর উপায় সম্পর্কে জানতে পারব।
এক পলকে সম্পুর্ন পোস্ট
ফ্রান্সে অভিবাসী বৈধকরণের উপায়
ফ্রান্সের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১২ সালের ২৮ নভেম্বর জারি করা এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ফ্রান্সে বসবাসকারী বিদেশিরা যারা কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে এক নাগাড়ে বসবাস করছে এবং বিগত দুই বছরের (২৪ মাসের) মধ্যে কমপক্ষে আট মাস চাকরিরত কিংবা নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অঙ্গীকার পত্র অথবা চাকরির চুক্তিপত্র দেখাতে পারবে তারা এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় অভিবাসনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় তিন প্রকারের অবৈধ অভিবাসী বৈধভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যেসব পরিবার পাঁচ বছর বা তার বেশী সময় ফ্রান্সে অবস্থান করছেন, নাবালক এবং চাকরিজীবী এ তিন প্রকারের অভিবাসীরা এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় আবেদন করতে পারবেন।
পরিবারের ক্ষেত্রে ফ্রান্সে বৈধকরণ
যে সব পরিবার (স্বামী ও স্ত্রী একত্রে) ফ্রান্সে পাঁচ বছর বা তার অধিক সময় বসবাস করছে, এবং যাদের কমপক্ষে একটি সন্তান রয়েছে যে গত তিন বছর ধরে ফরাসী স্কুলে পড়ছে তারা এ ধারার আওতায় ফ্রান্সে বৈধভাবে অভিবাসন মর্যাদা লাভ করবে। তবে এর জন্য কোন বিশেষ কোটা রাখা হবে না। অর্থাৎ কতটি পরিবার এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় বৈধতা পাবে তার কোন উল্লেখ নেই এ আইনে।অথবা, পারিবারিকভাবে বৈধতা পাওয়ার ক্ষেত্রে স্কুল গমনোপযোগী কোন শিশুর পিতা/মাতার উভয়ই দালিলিকভাবে ফ্রান্সে না থাকলেও চলবে। সে ক্ষেত্রে তারা কত বছর অবস্থান করছে তা প্রমাণের দরকার নেই।পরিবারের সঙ্গে একত্রীকরণ আইনের ক্ষেত্রে কিছু সহজীকরণ করা হয়েছে। এ প্রজ্ঞাপনের ফলে ফ্রান্সে অবস্থানকারী কোন স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে কেউ মিলিত হলে তাদের পাঁচ বছরের স্থলে আঠারো মাস থাকলেই হবে।
নাবালকের ক্ষেত্রে ফ্রান্সে বৈধকরণ
যে সব নাবালকের সঙ্গে কেউ নেই তাদের বৈধতা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সহজীকরণ করা হয়েছে। নাবালকেরা এখন থেকে বসবাস করার জন্য আবাসন সুবিধা পাবে। যদি তারা সাপোর্ট ওয়েলফেয়ার ফর চিলড্রেন (এএসই)। শিশু কল্যাণ সহায়ক কেন্দ্র থেকে কোন সুবিধা না পায়।নাবালকদের বিধিসম্মত করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়মের শিথিল করা হয়েছে। তবে এ সুবিধা পাবে সে সব নাবালকেরা যাদের বয়স ১৬ বছর পুর্ণ হওয়ার পূর্বে ফ্রান্সে প্রবেশ করেছে।
কর্মজীবীর ক্ষেত্রে ফ্রান্সে বৈধকরণ
চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে এ প্রজ্ঞাপনে। এ সুবিধার অর্ন্তভুক্ত তারা তিনটি ক্ষেত্রে পাবে: বিদেশিরা যারা পাঁচ বছরে ধরে ফ্রান্সে অবস্থান করছেন। এবং গত দুই বছরের মধ্যে ৮ মাস স্থায়ীভাবে কাজ করছেন।৭ বছর রয়েছে এর মাঝে ৮ মাস কোন ধরনের ও কাজ করছেন।পরবর্তীদের ক্ষেত্রে যাদের নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অঙ্গীকার পত্র রয়েছে। তাদের এ জন্য এ ধারা রদ করা হয়েছে।এবারই প্রথমবারের মতো আলজেরিয়ান ও তিউনিসিয়ার নাগরিকদের ফ্রান্সে অভিবাসনের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু ধারা সহজ করা শিথিল করা হয়েছে। এ প্রজ্ঞাপনের ফলে কাজের অনুমতিপত্র প্রদানের বিষয় শিথিল করার পাশাপাশি প্রশাসনিক কিছু ধারা সহজ করা হয়েছে। নিয়োগ কর্তা পরিবর্তন হলে ও এ সুবিধা পাওয়া যাবে। চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে অস্থায়ী অথবা খণ্ডকালীন চুক্তিবদ্ধরা ও এ ধারার আওতায় আবেদনের সুযোগ পাবেন।
ফ্রান্সে সবচেয়ে বেশী সংখ্যক অবৈধ অভিবাসী বৈধতা লাভ করে ১৯৮১ সালে। এ বছর এক লাখ ৩১ হাজার অবৈধ অভিবাসী এক সঙ্গে বৈধতা লাভ করে। এরপর ১৯৯৭ সালে ৮০ হাজার বৈধতা পায়।গত ২০১২ সালের ২৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার এ প্রজ্ঞাপনটি বিভিন্ন প্রিফেকচারে পাঠানো হয়। এ বছর প্রায় ৩০ হাজার অবৈধ অভিবাসী এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় বৈধতা পেতে পারে। তবে এ ধরনের অস্পষ্ট প্রজ্ঞাপনের কঠোর সমালোচনা করেছেন ইউএমপি’র সংসদ সদস্য গুইলম ল্যারিভ।
ফ্রান্সে অভিবাসীদের বৈধকরন ফ্রান্সের সরকারের জন্য একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
Follow topics bangla facebook page
আরো পড়ুনঃ