ফাইভারে কাজ পাওয়ার উপায় জেনে নিন
যে কেউ ফাইভারে কাজ করে খুব সহজেই ডলার আয় করতে পারেন। ফাইভার বিশ্বের অন্যতন একটি জনপ্রিয় একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস। ফাইভার ব্যবহার করে দেশি বিদেশী অনেক ফ্রিল্যান্সার তাদের জীবন জীবিকার মান সুন্দর করছে। ফাইভারে কাজ পাওয়ার জন্য নতুন সেলার হিসেবে আপনি অবশ্যই আপনার গিগ যত দ্রুত সম্ভব র্যাংক করতে চাইবেন। যত দ্রুত আপনি র্যাংক করবেন তত দ্রুত আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। কাজ পেলেই আপনার পকেটে টাকা আসা শুরু করবে।আজকের ব্লগে আমরা ফাইভারে কাজ পাওয়ার উপায় জানতে পারবো।
ফাইভারে কাজ পাওয়ার উপায়
ফাইভারে নিজের গিগ র্যাংক করানো কখনো কখনো সময় সাপেক্ষ এবং ধৈর্য্যের ব্যাপার। তবে কিছু জিনিসের উপর বাড়তি নজর রাখলে আপনি আপনার ফাইভারের গিগকে সার্চ রেজাল্টের প্রথম পেজে নিয়ে আসতে পারবেন।ফাইভারে কাজ পাওয়ার জন্য-
- গিগ টাইটেল অপটিমাইজ করা – গিগ টাইটেল হচ্ছে ফাইভারে কাজ পাওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই এটি লেখার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।লেখা টাইটেল যেন খুব বেশি বড় না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। গিগের টাইটেল যত শর্ট হবে, একজন বায়ারের কাছে এটি বুঝতে ততটাই সহজবোধ্য হবে। প্রথম keywords দিকে SEO এর দৃষ্টিভঙ্গিতে মনোযোগ দিন। মানুষ কি লিখে সার্চ করে থাকে, তা জানার চেষ্টা করুন। আপনার টাইটেলে সর্বদা জনপ্রিয় keyword গুলো রাখার চেষ্টা করুন।সব সময় মাথায় রাখবেন যে আপনার প্রধান কাজ থাকবে আপনার গিগের মাধ্যমে ক্লায়েন্টকে আপনাকে কাজ দিতে আগ্রহী করা। এজন্য ক্লায়েন্টের মনোযোগ আকর্ষন করার জন্য আপনার গিগের টাইটেল সংক্ষিপ্ত, তথ্য বহুল এবং আকর্ষণীয় রাখার চেষ্টা করবেন। ফাইভারে সাধারনত গিগের টাইটেল দেবার জন্য স্পেস সহ সর্বোচ্চ ৮০ টি ক্যারেক্টার ব্যবহার করা যায়।
- গিগের বিবরণ আকর্ষণীয় করে তোলা-আপনার গিগের বিবরণ ক্লায়েন্টকে আপনার কাছ থেকে সেবা বেছে নেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রয়োজন পর্যাপ্ত সময় নিয়ে সেবার ধরন সম্পর্কে বিস্তারিত লিখে ফেলতে হবে। এছাড়া বিবরণে কি অফার প্রদান করছেন,পারদর্শীতা প্রদর্শন এবং সেবা নিলে ক্লায়েন্ট কি সুবিধা পাবে সে সম্পর্কে অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। বিবরণ লিখার সময় সকল প্রকার প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড স্বাভাবিকভাবেই বিবরণের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করতে হবে।
- মার্কেটের সাথে প্রতিযোগিতামূলক একটি প্রাইস অফার- ক্লায়েন্টকে আকর্ষণ করার জন্য এবং গিগকে র্যাংকিং করানোর জন্য একটি প্রতিযোগিতামূলক প্রাইসিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যে সকল সেবা প্রদান করতে চান সে সকল কাজের মার্কেট ভ্যালু সম্পর্কে জেনে নিয়ে গিগে তার সাথে প্রতিযোগিতামূলক একটি প্রাইস যুক্ত করতে হবে।ক্লায়েন্টের জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজ কিংবা গিগ এক্সট্রার মতো অপশন এর ব্যবস্থা রাখতে হবে।প্রাইসিং এর সাথে কি ভ্যালু আনা হয়েছে সেটি যেন পরিলক্ষিত হয় এবং মার্কেটের সাথে প্রতিযোগিতা মূলক হয় সে ব্যাপারে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
- ভিডিও ব্যবহার- ফাইভার গিগে আকর্ষণীয় ভিডিও ব্যবহার করতে পারলে ওই সার্ভিসটি বিক্রির সম্ভবনা ৬০% বেড়ে পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। স্বয়ং ফাইভার অথরিটিই নিজেই এটা তুলে ধরেছেন।তাই চেষ্টা করতে হবে ফাইভার অথরিটির নিয়ম মেনে একটি ভিডিও তৈরি করার। কারণ একটি স্টিল ইমেজের চেয়ে ভিডিওতে আরো বিস্তারিতভাবে সার্ভিসটি সম্পর্কে বায়ারকে ধারণা দিতে পারা যায়।বিগত বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা গেছে যে সকল গিগে ভিডিও ছিল তাদের সেল দিনদিন অনেক বেড়ে চলেছে। যে সকল সেলার নিজেরাই তাদের নিজের কাজের উপস্থাপন করতে পারছে তাদের সেল প্রায় ৯৬% বেড়েছে। যাদের ভিডিও ইফেক্ট, এনিমেশন, লেখার মাধ্যমে তাদের সেল ৮৪% বেড়েছে। সুতরাং গিগে ভিডিও কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।
- পজিটিভ রিভিউ পাবার জন্য ফোকাস-ফাইভারে পজিটিভ রিভিউ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি আপনার রেপুটেশন বৃদ্ধির পাশাপাশি আপনার গিগ র্যাংক করার জন্য অনেক বেশি সম্ভাবনা প্রদান করে। আপনার কাছে যখন কোনো ক্লায়েন্ট কাজ নিয়ে আসবে তখন চেষ্টা করুন সঠিক সময়ে সুন্দর পরিপাটিভাবে ক্লায়েন্টের কাজ যেন ডেলিভারি হয়ে যায়। এতে করে ক্লায়েন্ট আপনার উপর খুশি হয়ে আপনাকে একটি পজিটিভ রিভিউ দিয়ে যাবে। কিন্তু কখনোই ক্লায়েন্টের কাছে রিভিউ এর জন্য আবেদন করবেন না। নিজের কাজের মাধ্যমে রিভিউ অর্জন করে নিন। আপনার একাউন্টে যত বেশি পজিটিভ রিভিউ আসবে আপনার একাউন্ট ততোবেশি সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠবে। এতে করে নতুন ক্লায়েন্টদের কাছে ইম্প্রেশন বেড়ে যাবে যেটি কাজ পেতে এবং র্যাংক উন্নত করতে সহায়তা করবে।
-
ছবি সংযুক্ত-ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট যেকোনো কিছু আকৃষ্ট করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনার গিগের জন্য হাই কোয়ালিটি ছবি যেটি আপনার কাজ সম্পর্কে, আপনার বিশেষত্ব এর ধারনা দেয় এবং আপনার উপর ভালো ইম্প্রেশন পড়বে এগুলো ব্যবহার করুন। তবে এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে যে আপনার ছবি যেন প্রাসঙ্গিক, প্রফেশনাল এবং চোখে দেখতে দারুন হয়। কোনো প্রকার ভিন্ন ধর্মী ছবি ব্যবহার করলে অনেক সময় ক্লায়েন্টের একটি খারাপ ইম্প্রেশন পড়ে যায়। ফলে এমন হতে পারে আপনি একটি কনফার্ম পাওয়া কাজ হারিয়ে ফেলতে পারেন।
আরো পড়ুন
টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় জেনে নিন
টুইটার থেকে টাকা ইনকাম করার পদ্ধতি জেনে নিন
ফাইবারে নিজের গিগ র্যাংক করানোর জন্য ধৈর্যের থেকে বড় কিছু হতে পারে না। ফাইবারে টাকা ইনকাম করা সহজ হলেও ফ্রিল্যান্সারকে ধৈর্য্য ধরে তার একাউন্ট গড়ে তুলতে হবে। এভাবেই চাইলে একটা সুন্দর ফাইবার একাউন্ট খুলে একজন তার জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।
আরো পড়ুনঃ
সঠিক পথে অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করুন