Education

পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায় জেনে নিন

পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়া একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে বিশেষ করে যদি আপনার আশেপাশে অনেক কিছু আপনাকে বিভ্রান্ত করে বা যদি আপনি দীর্ঘক্ষণ ধরে পড়ার চেষ্টা করেন। তবে কিছু কৌশল এবং সঠিক অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আপনি পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারবেন এবং আপনার পাঠের মানোন্নয়ন ঘটাতে পারবেন।আজকের ব্লগে আমরা পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবো।

পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায়

পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার জন্য কিছু উপায় রয়েছে। সারাদিন বই নিয়ে পড়ে থাকার চেয়ে দুই ঘন্টা মনোযোগ সহকারে পড়া অনেক লাভজনক। আমরা আশেপাশে খেয়াল করে দেখব যারা ভালো ছাত্র তারা সব সময় ভালো রেজাল্ট করে। এর পিছনে মূলত একটাই কারণ আর সেটি হচ্ছে তারা যতোটুকু সময় পড়াশোনা করেন তা মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করেন ।পড়াশোনার মাঝে মনোযোগ বৃদ্ধি করার জন্য অবশ্যই কিছু উপায়  বা টেকনিক রয়েছে।আপনি যদি সেই টেকনিকগুলো আয়ত্ত করতে পারেন তাহলে আপনি ভালো কিছু করতে পারবেন। নিম্নে পড়াশোনার মনোযোগী হওয়ার উপায় গুলো আলোচনা করা হলো সেগুলো ভালোভাবে অনুসরণ করলে আপনিও পড়াশোনায় মনোযোগ বৃদ্ধি করতে পারবেন

সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

প্রতিদিনের পড়াশোনার জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ্য যদি অস্পষ্ট হয় তাহলে আপনার মনোযোগ হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি একদিনে পাঁচটি অধ্যায় পড়ার লক্ষ্য ঠিক করেন তাহলে সেটি আপনার মনকে সুনির্দিষ্ট করে তুলবে এবং আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পথ ধরে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

প্রথমে ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। উদাহরণস্বরূপ- এক ঘণ্টার মধ্যে একটি অধ্যায়ের প্রথম ১০টি পৃষ্ঠা পড়বেন এ ধরনের ক্ষুদ্র লক্ষ্য গঠন আপনাকে দীর্ঘমেয়াদি সফলতার দিকে নিয়ে যাবে। লক্ষ্য পূরণের পর নিজেকে সামান্য পুরস্কৃত করতে পারেন, যা আপনার মনোবল বৃদ্ধি করবে।

সময় ব্যবস্থাপনা এবং পড়াশোনা পরিকল্পনা।

আপনার পড়াশোনার জন্য একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন এবং তা অনুযায়ী পরিকল্পিত সময় নির্ধারণ করুন। সাধারণত সকালের সময়টিকে পড়াশোনার জন্য সবচেয়ে উপযোগী বলে মনে করা হয় কারণ এ সময় মন সতেজ থাকে। তবে আপনাকে অবশ্যই নিজের জন্য উপযুক্ত সময় বের করতে হবে এবং সেই সময়টিতে যতটুকু সম্ভব মনোযোগী হয়ে পড়াশোনা করতে হবে।

পড়াশোনার সময়গুলোকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে নিন। উদাহরণস্বরূপ ২৫-৩০ মিনিট পড়াশোনার পর ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিন। এই পদ্ধতিটিকে পোমোডোরো টেকনিক বলা হয় যা আপনার মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়তা করে।

উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন

পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার জন্য একটি সঠিক পরিবেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে পড়বেন সেই স্থানটি যেন শান্ত এবং নিরিবিলি হয় এমন জায়গায় পড়ার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত শব্দ এবং অপ্রয়োজনীয় আলো থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। পড়ার সময় আপনার টেবিলে প্রয়োজনীয় বই, খাতা এবং অন্যান্য উপকরণ রাখুন যেন আপনাকে বারবার উঠে সেগুলো আনতে না হয়।

আপনার পড়ার স্থানটি পরিচ্ছন্ন এবং সুসংগঠিত রাখুন। এলোমেলো পরিবেশ আপনার মনকে এলোমেলো করে তুলতে পারে। আরামদায়ক চেয়ার এবং সঠিক আলো ব্যবহার করুন যা আপনার চোখের জন্যও সুবিধাজনক হবে।

ফোন এবং অন্যান্য ডিভাইস থেকে দূরে থাকুন

স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট এই সব ডিভাইস আপনার মনোযোগ ভেঙে দিতে পারে।পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার জন্য এগুলো বন্ধ রাখার চেষ্টা করুন অথবা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে রেখে আসুন। যদি খুব প্রয়োজন না হয় তবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। আপনি ফোনে “ডু নট ডিস্টার্ব” মোড চালু রাখতে পারেন অথবা সময়সূচী অনুযায়ী ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারেন।

ডিজিটাল ডিসট্রাকশন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সময় ভাগ করে নিন। যেমন- পড়াশোনা করার পর নির্দিষ্ট বিরতিতে আপনি আপনার ফোন চেক করতে পারেন এতে মনোযোগ হারানোর ঝুঁকি কমে যাবে।

পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম নিন

ঘুমের অভাব হলে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়া  কঠিন হয়ে পড়ে।পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। পর্যাপ্ত ঘুম আপনার মস্তিষ্ককে পুনরায় কার্যকর করে এবং আপনার মনোযোগ ক্ষমতা বাড়ায়। ঘুমের সময় মস্তিষ্ক আমাদের শেখা তথ্যগুলো সংরক্ষণ করে তাই ভালো ঘুম আপনাকে ভালোভাবে শেখার ক্ষমতা দেয়।

আপনার দৈনন্দিন রুটিনে বিশ্রামের জন্যও পর্যাপ্ত সময় নির্ধারণ করা উচিত। অতিরিক্ত চাপ এবং ক্লান্তি পড়াশোনার কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। তাই নিয়মিত বিরতি নিয়ে কাজ করুন এবং মনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন।

নোট নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন

পড়ার সময় নোট নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে আপনার মনোযোগ বজায় থাকে এবং শেখার বিষয়বস্তুগুলো ভালোভাবে মনে রাখা সম্ভব হয়। যখন আপনি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নোট আকারে লিখে রাখবেন তখন সেগুলো আপনার মস্তিষ্কে আরও গভীরভাবে প্রোথিত হবে।

এছাড়া নোটগুলোকে পরে রিভিউ করার জন্য ব্যবহার করা যায় যা পরীক্ষার সময় আপনাকে প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। নোট নেওয়ার সময় রঙিন পেন বা হাইলাইটার ব্যবহার করতে পারেন যা আপনার নোটগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।এটি আপনাকে আরো পড়াশোনায় মনোযোগী করে তুলবে।

মেডিটেশন এবং শারীরিক ব্যায়াম

মেডিটেশন এবং শারীরিক ব্যায়াম আপনার পড়াশোনায় মনোযোগী হতে সাহায্য করে। মেডিটেশন মানসিক চাপ কমিয়ে মনকে শান্ত করে এবং মনোযোগ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট মেডিটেশন করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।

শারীরিক ব্যায়াম মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় যা একাগ্রতা উন্নত করতে সহায়তা করে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে যা আপনাকে পড়াশোনায় ভালো ফল দিতে সহায়তা করবে।

পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখা একটি অভ্যাস যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গড়ে তোলা যায়। উপযুক্ত পরিবেশ, সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ, সময় ব্যবস্থাপনা এবং মনোযোগ বাড়ানোর বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আপনি পড়াশোনায় সফল হতে পারবেন। কঠোর পরিশ্রম এবং একাগ্রতা ছাড়া সফলতা সম্ভব নয়, তাই প্রতিদিন নিজেকে উৎসাহিত রাখুন এবং এই কৌশলগুলো মেনে চলুন।

আরো পড়ুনঃ

দ্রুত ইংরেজি শেখার সহজ উপায়

হাতের লেখা সুন্দর করার উপায়

Follow topics bangla facebook page

Shakiul Hasan

Hey everybody! I blog on everything and anything that spikes any hint of interest in me! Do check my blogs out

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button