Health Tips

কাশি দূর করার উপায় জেনে নিন

আপনার যদি কাশি হয় তাহলে অবশ্যই কাশি দূর করার উপায় জেনে নিতে হবে।কাশি হল শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া যা শ্বাসনালীর মধ্যে জমে থাকা শ্লেষ্মা বা অন্যান্য ক্ষতিকারক পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে যেমন- সর্দি-কাশি, অ্যালার্জি, দূষণ, ধূমপান, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণে। সাধারণত কাশি কিছুদিনের মধ্যে সেরে যায় তবে দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা কষ্টদায়ক কাশি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু ঘরোয়া প্রতিকার এবং চিকিৎসা গ্রহণ করা যেতে পারে।আজকের ব্লগে আমরা কাশি দূর করার উপায় জানতে পারবো।

কাশি দূর করার উপায়

বর্তমানে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে কম বেশি সবাই সর্দি-কাশি ঠান্ডা জনিত সমস্যায় ভুগছেন। সর্দি কাশি হওয়ার কারণে ঠিকভাবে দৈনন্দিন জীবনের কাজগুলো করা যাচ্ছে না। সর্দি কাশি যন্ত্রণার থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ঘরোয়া কিছু কাশি দূর করার উপায় রয়েছে। আমি আজকে আপনাদের সাথে  কাশি দূর করার কয়েকটি উপায় শেয়ার করব এই উপায় গুলো অনুসরণ করলেই     কাশি থেকে মুক্তি পাবেন ।

গরম পানীয় পান করা

কাশি দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে গরম পানীয় পান করা সর্বপ্রথম কাজ।গরম পানীয় গলা নরম করতে সাহায্য করে এবং শ্লেষ্মা কমায়। এটি শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখে এবং কাশি কমাতে সহায়ক। মধু ও লেবুর চা, আদা চা এবং তুলসী পাতা মিশ্রিত চা কাশি উপশমে বিশেষভাবে কার্যকর। গরম পানীয় শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।গরম পানিতে আদা, মধু, লেবুর রস এবং তুলসী পাতা মিশিয়ে নিতে হবে এবং এটি দিনে দুই থেকে তিনবার পান করতে হবে।

মধু খাওয়া

মধু একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান হিসেবে কাজ করে, যা কাশি উপশমে সহায়ক। মধু গলা নরম করে এবং শ্বাসনালীর প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এটি শুষ্ক কাশি এবং সাধারণ ঠান্ডা-কাশির জন্য অত্যন্ত উপকারী।কাশি হলে আপনাকে অবশ্যই দিনে দুই-তিনবার এক চামচ মধু খেতে হবে।আপনি চাইলে মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে একটি গরম পানীয়ও তৈরি করতে পারেন।

আদা খাওয়া

আদা কাশি নিরাময়ে একটি প্রাচীন ওষুধ হিসেবে পরিচিত। এতে থাকা প্রদাহ বিরোধী উপাদান শ্বাসনালীর প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। আদা চা গলা শীতল করতে এবং কাশি কমাতে কার্যকর।একটি ছোট টুকরো আদা পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে এবং এতে মধু যোগ করে পান করতে হবে।দিনে দুই-তিনবার এই আদা চা পান করলে কাশি দ্রুত সেরে উঠবে।

বাষ্প গ্রহণ

বাষ্প গ্রহণ কাশির জন্য একটি প্রাচীন এবং কার্যকর পদ্ধতি। এটি শ্বাসনালীর শ্লেষ্মা নরম করে এবং কাশি কমাতে সহায়তা করে। শুষ্ক কাশি বা গলাব্যথার ক্ষেত্রে বাষ্প গ্রহণ বেশ কার্যকর।এরজন্য আপনাকে একটি বড় বাটিতে গরম পানি নিতে হবে এবং মাথা একটি তোয়ালে দিয়ে ঢেকে বাষ্প নিতে হবে।৫-১০ মিনিট ধরে বাষ্প গ্রহণ করতে হবে এবং এটি দিনে দুইবার করতে হবে।এতে শ্বাসনালীর শ্লেষ্মা নরম হবে এবং কাশি উপশম হয়।

লবণ পানি দিয়ে গার্গল করা

লবণ পানি দিয়ে গার্গল করা কাশি দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরাতুন পদ্ধতি।গরম লবণ পানির গার্গল গলা পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং শ্বাসনালীর জীবাণু ধ্বংস করে। এটি শুষ্ক কাশি এবং গলা ব্যথা কমাতে কার্যকর। লবণ পানি গলার ইনফ্ল্যামেশন কমাতে সাহায্য করে এবং কাশির মাত্রা কমায়।এর জন্য এক গ্লাস গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে দিনে কয়েকবার গার্গল করতে পারেন।এটি গলা পরিষ্কার রাখতে এবং কাশি উপশমে সহায়ক।

তুলসী পাতা

কাশি দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে তুলসী পাতা সবচেয়ে বেশি কার্যকর।তুলসী পাতায় অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান রয়েছে যা কাশি এবং গলা ব্যথা উপশম করতে কার্যকর। তুলসী পাতার চা শ্বাসনালীর প্রদাহ কমায় এবং ঠান্ডা-কাশি উপশমে সাহায্য করে।তুলসী পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা তুলসী পাতা দিয়ে চা বানিয়ে পান করতে পারেন। এটি দিনে দুই থেকে তিনবার পান করা যেতে পারে।

লবঙ্গ

লবঙ্গ শুষ্ক কাশি কমাতে সহায়ক। এটি একটি প্রাকৃতিক প্রদাহ কমানোর উপাদান এবং শ্বাসনালীর প্রদাহ কমায়। লবঙ্গ চুষে খেলে তা শ্বাসতন্ত্রের শ্লেষ্মা পরিষ্কার করতে এবং কাশি উপশম করতে সাহায্য করে।আপনি চাইলে লবঙ্গ মুখে চুষে খেতে পারেন অথবা লবঙ্গের তেল গরম পানিতে মিশিয়ে পান করতে পারেন।

ধূমপান পরিহার করা

কাশি দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে ধূমপান পরিহার করা অতি প্রয়োজনীয়।ধূমপান শ্বাসনালীকে জ্বালাপোড়া করে এবং কাশির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যারা ধূমপান করেন তাদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কাশির ঝুঁকি থাকে। ধূমপান পরিহার করা কাশি দূর করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ধূমপান না করলে শ্বাসনালী পরিষ্কার থাকে এবং কাশি দ্রুত সেরে ওঠে।

চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া

যদি কাশি দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় বা কাশির সঙ্গে রক্ত আসে, শ্বাসকষ্ট হয় বা উচ্চ জ্বর থাকে তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। দীর্ঘস্থায়ী কাশি কখনও কখনও ফুসফুসের সংক্রমণ, ব্রঙ্কাইটিস বা অ্যাজমার লক্ষণ হতে পারে যা চিকিৎসার প্রয়োজন।

কাশি দূর করার জন্য অনেক ঘরোয়া প্রতিকার এবং চিকিৎসা রয়েছে যা সাধারণত কার্যকর হতে পারে। তবে যদি কাশি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্য কোনো গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

আরো পড়ুনঃ

ঘরোয়া ভাবে এলার্জি দূর করার উপায়

পেট ব্যথা কমানোর উপায় কি?

Follow topics bangla facebook page

Shakiul Hasan

Hey everybody! I blog on everything and anything that spikes any hint of interest in me! Do check my blogs out

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button