কম্পিউটারের হেলথ চেক করার নিয়ম জেনে নিন
প্রতিটি কম্পিউটারে অসংখ্য কম্পোনেন্ট ও সফটওয়্যার থাকে, যা সময়ের সাথে সাথে সফটওয়্যার বাগ, আউটডেটেড ড্রাইভার, ইত্যাদি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। এই কারণে নিয়মিত কম্পিউটার এর হেলথ চেক করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।কম্পিউটারের হেলথ চেক করা না হলে অনেক সময় কম্পিউটার স্লো হয়ে যায়।এছাড়াও কম্পিউটারের অনেক ক্ষতি হতে পারে।আজকের ব্লগে আমরা উইন্ডোজ কম্পিউটারের হেলথ চেক করার নিয়ম জানতে পারবো।
কম্পিউটারের হেলথ চেক করার নিয়ম
কম্পিউটারের হেলথ চেক করার কিছু নিয়ম রয়েছে-
১। PC Health Check অ্যাপ ব্যবহার
উইন্ডোজ কম্পিউটারে PC Health Check নামে একটি বিল্ট-ইন অ্যাপ রয়েছে যা দ্বারা অনেক ধরনের ইউটিলিটি সুবিধা পাওয়া যায়।অপারেটিং সিস্টেম আপডেটেড কিনা দেখা, কতটুকু স্টোরেজ খালি রয়েছে ইত্যাদি সুবিধা পাওয়া যায়।এ পদ্ধতিতে হেলথ চেক আপের জন্য স্টার্ট মেন্যুতে গিয়ে Pc Health Check লিখে সার্চ করে দেখতে হবে ইতিমধ্যে আপনার কম্পিউটারে অ্যাপটি ইন্সটল আছে কিনা। আপনার উইন্ডোজ কম্পিউটারে অ্যাপটি না থাকলে ইন্সটল করতে হবে যা মাইক্রোসফট এর ওয়েবসাইট থেকে ইন্সটল করা বেশ সহজে। অ্যাপটি খুঁজে নিয়ে ওপেন করতে হবে। এরপর ডানদিকে প্রতিটি সিস্টেম চেক এর জন্য আলাদা বক্স দেখা যাবে। কোনো ধরনের ক্রিটিক্যাল ইস্যু থাকলে সেক্ষেত্রে ওয়ার্নিং আইকন দেখাবে।পিসি হেলথ চেক অ্যাপে এমনকি ব্যাটারি ক্যাপাসিটি সময়ের সাথে কি পরিমাণ ডিগ্রেড হচ্ছে সে বিষয়েও তথ্য পাওয়া যাবে। এই তথ্য থেকে ল্যাপটপ এর ব্যাটারি পরিবর্তন করার প্রয়োজন রয়েছে কিনা সে সম্পর্কে ধারণা পেওয়া যাবে। পিসি হেলথ চেক অ্যাপের ডান দিকের প্রতিটি বক্সের পাশে থাকা ড্রপ ডাউন আইকনে ক্লিক করে সাজেশন বা টিপস দেখা যাবে কোনো সমস্যার সমাধান করতে বা কম্পিউটারের পারফরম্যান্স ইম্প্রুভ করতে। অ্যাপটি উইন্ডোজ ১০ এবং উইন্ডোজ ১১ উভয়ের জন্যই কম্পিউটারের হেলথ চেক আপের জন্য পাওয়া যাবে।
২। উইন্ডোজ সিকিউরিটি এর সাহায্যে কম্পিউটারের হেলথ চেক আপ
Windows সিকিউরিটি হলো আরেকটি উইন্ডোজ ইউটিলিটি টুল যা ব্যবহার করে পিসি’র হেলথ সম্পর্কে বিশদ ধারণা পাওয়া যাবে। এই টুল ব্যবহার করে PC Health Check দ্বারা প্রদত্ত তথ্যের পাশাপাশি আরো অনেক অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।Windows Security অ্যাপে প্রবেশ করতে স্টার্ট মেন্যুতে Windows Security লিখে সার্চ করতে হবে, এরপর অ্যাপটি ওপেন করতে হবে। অ্যাপ ওপেন করার পর একটি হেলথ রিপোর্ট দেখতে পাওয়া যাবে। যেসব ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই সেগুলোতে গ্রিন চেকমার্ক ও সমস্যা থাকলে ট্রাইএংগেলের মধ্যে এক্সক্লেমেশন মার্ক দেখতে পাবে।যেসব ক্ষেত্রে সমস্যা আছে সেগুলো সিলেক্ট করে টিপস ও লিংকস পাওয়া যাবে যা ব্যবহার করে সমস্যার সমাধান করা যায়। এছাড়া মেইন স্ক্রিনে একটি লিংকও দেখতে পাওয়া যাবে যা ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় উইন্ডোজ সেটিংস টুল অ্যাকসেস করা যায়। আবার গ্রিন চেকমার্ক দেওয়া যেকোনো আইটেম সিলেক্ট করে আরো ডিটেইলস জানা যাবে।Windows Security অ্যাপ ব্যবহার করে যেসব সমস্যা সম্পর্কে জানা যায়-
- লো স্টোরেজ ক্যাপাসিটি
- উইন্ডোজ একাউন্ট সম্পর্কিত সমস্যা
- ফায়ারওয়াল বা নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত সমস্যা
- মেমোরির মত সিস্টেম ডিভাইস সম্পর্কিত সমস্যা
- ওভারাল সিস্টেম পারফরম্যান্স
- মাইক্রোসফট ফ্যামিলি একাউন্ট ম্যানেজমেন্ট
৩। ল্যাপটপের ব্যাটারি হেলথ চেক করা
যেসব ল্যাপটপে স্লিপ স্টেইট ফিচারটি রয়েছে সেসব ল্যাপটপ এর জন্য একটি উইন্ডোজ কমান্ড-লাইন ইউটিলিটি রয়েছে যা ব্যবহার করে ল্যাপটপে ইন্সটল থাকা ব্যাটারির বর্তমান হেলথ এনালাইজ করা যায়।এই হেলথ রিপোর্ট থেকে ব্যাটারি পাওয়ার ব্যবহার করে এমন সকল ডিভাইস ও তাদের এনার্জি খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়। এছাড়া ব্যাটারি সম্পূর্ণ ডিসচার্জ (Dead) থেকে সম্পূর্ণ চার্জ (Full) কতবার হয়েছে, অর্থাৎ ব্যাটারি সাইকেল যাকে বলে সে সম্পর্কে তথ্য পেয়ে যাবেন।এই ফিচারটি ব্যবহার করতে স্টার্ট মেন্যুতে Command Prompt লিখে সার্চ করুন। এরপর Command Prompt এর উপর রাইট ক্লিক করুন ও Run as administrator সিলেক্ট করে অ্যাপটি ওপেন করুন।এরপর ৩০ সেকেন্ড মত ওয়েট করুন, এরপর আপনার ডেস্কটপে “fullsleepstudy.html” নামে একটি ফাইল দেখতে পাওয়া যাবে। ফাইলটি ওপেন করলে আপনার ডিভাইসের ব্যাটারি ড্রেইন ও ডিসচার্জ এর বিশদ হিস্টোরি পাওয়া যাবে।ম্পট ইউজ করে ব্যাটারি রিপোর্ট দেখলে সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শেষ ৩ দিনের তথ্য দেখতে পাবেন, এই মেয়াদ বাড়াতে /duration প্যারামিটার যোগ করুন কমান্ড এর সাথে।
৪। পারফর্ম্যান্স মনিটর এর সাহায্যে কম্পিউটারের হেলথ চেক আপ
উইন্ডোজ কম্পিউটারের জন্য Performance Monitor টুলটি রয়েছে বেশ অনেকদিন হলেও অধিকাংশ মানুষ এটি ব্যবহারই করেন না। তবে কম্পিউটারের হেলথ সম্পর্কিত সমস্যা এই অ্যাপ ব্যবহার করে চেক করা বেশ সহজ। এই অ্যাপে ডিস্ক, মেমোরি, ডিভাইসেস, ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য পেয়ে যাবেন।Windows Start Menu থেকে Performance Monitor লিখে সার্চ করে অ্যাপটি ওপেন করুন। System Diagnostics এবং System Performance নামে দুইটি রিপোর্ট দেখতে পাবেন এই অ্যাপে। উভয় রিপোর্ট দেখতে আপনাকে Performance Monitor থেকে রিপোর্ট জেনারেট করতে।বামদিকে থাকা Data Collector Sets সিলেক্ট করুন, এবং System সিলেক্ট করুন। এরপর System Diagnostics এ রাইট ক্লিক করুন এবং Start সিলেক্ট করুন। System Performance এর জন্যেও একই পদ্ধতি ফলো করুন।কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর দেখবেন উভয় রিপোর্ট জেনারেট হয়েছে। Performance monitor এর Reports সেকশন থেকে রিপোর্টগুলো অ্যাকসেস করতে পারবেন।রিপোর্টগুলো ওপেন করলে অনেক তথ্য দেখতে পাবেন। Basic System Checks এবং Resource Overview দেখে সবচেয়ে সহজে যাচাই সম্ভব। এগুলোই মূলত বুঝতে পারা সহজ সাথে থাকা ইন্ডিকেটর লাইট থাকার কারণে রিপোর্ট এর বাকি অংশে প্রদত্ত তথ্যগুলো বুঝতে সিস্টেম এনালিটিক্স এর এডভান্সড জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
উল্লেখিত সকল উপায় ব্যবহার করে আপনার উইন্ডোজ কম্পিউটারের হেলথ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবেন ও সেগুলোর সমস্যা সমাধানে পদক্ষেও গ্রহণ করতে পারবেন।
Follow topics bangla facebook page
আরো পড়ুনঃ
ডিলিট করা ফেসবুক পোস্ট কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় আসুন জেনে নেই
বিকাশে স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম